স্বপ্নজয় হলো না ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদের
টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০২৩, ২৩:৩৮:২০ | অনলাইন সংস্করণ
আশা ছিল বড় চাকুরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন। বাড়িতে বড় অট্টলিকা করে পরিবারকে সুখে রাখবেন। কিন্তু সেই আশা অধরাই থেকে গেল মাসুদ খানের।
রোববার সকাল ৮টার দিকে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার দুর্ঘটনায় নিহত হন মাসুদ।
তিনি গোপালগঞ্জের আদমপুর গ্রামের আমজেদ আলী খানের মার্স্টাস পাস করা ছেলে মাসুদ খান (২৭)। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের মার্স্টাস পাস করেন।
নিহত মাসুদ খানের পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তিন দিন আগে ঢাকা থেকে মা-বাবা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসেন মাসুদ খান। রোববার খুব ভোরে ইমাদ পরিবহণে ঢাকা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঢাকা আর যাওয়া হলো না। বাস খাদে পড়ে সমাধি হলো একজন স্বপ্নবাজ তরুণের। মৃতদেহ নিতে এসে মাসুদের বড় ভাই শফিক খান বার বার ভাইয়ের জন্যে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনো ভাবেই ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন শফিক খান।
মাসুদ খানের ভাই শফিক খান বলেন, ‘কথা ছিল কিছু পরে বড় চাকুরি করে পরিবারের দায়িত্ব নেবে মাসুদ। মাস্টাস পাস করে ঢাকাতেই ছোটখাট কম্পিউটারের কাজ করত। যা ইনকাম করত তা দিয়ে নিজে চলে বাড়িতেও টাকা-পয়সা পাঠাত। আর মাঝে মাঝে বড় চাকুরিতে যোগ দিতে পরীক্ষা দিত। অল্প দিনের মধ্যেই চাকুরি পাবার কথা ছিল। কিন্তু সেই চাকুরি আর করা হলো না। কিভাবে এই শোক মেনে নেব। আমার প্রাণের ছোট ভাইকে আর পাব না, এটা মানতে পারছি না।’
মাসুদের বন্ধু শাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা একই গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি। মাসুদ আমার চেয়েও অনেক মেধাবী ছিল। সে মুকসেদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে দর্শন বিভাগের অর্নাস ও মার্স্টাস শেষ করে। আমাকে মাঝে মাঝেই বলত, বড় চাকুরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেই চাকুরি আর হলো না। এর জন্যে বুকটা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।’
মাদারীপুর জেলা পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহণের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তের জন্যে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
স্বপ্নজয় হলো না ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদের
আশা ছিল বড় চাকুরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন। বাড়িতে বড় অট্টলিকা করে পরিবারকে সুখে রাখবেন। কিন্তু সেই আশা অধরাই থেকে গেল মাসুদ খানের।
রোববার সকাল ৮টার দিকে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার দুর্ঘটনায় নিহত হন মাসুদ।
তিনি গোপালগঞ্জের আদমপুর গ্রামের আমজেদ আলী খানের মার্স্টাস পাস করা ছেলে মাসুদ খান (২৭)। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের মার্স্টাস পাস করেন।
নিহত মাসুদ খানের পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তিন দিন আগে ঢাকা থেকে মা-বাবা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসেন মাসুদ খান। রোববার খুব ভোরে ইমাদ পরিবহণে ঢাকা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঢাকা আর যাওয়া হলো না। বাস খাদে পড়ে সমাধি হলো একজন স্বপ্নবাজ তরুণের। মৃতদেহ নিতে এসে মাসুদের বড় ভাই শফিক খান বার বার ভাইয়ের জন্যে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনো ভাবেই ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন শফিক খান।
মাসুদ খানের ভাই শফিক খান বলেন, ‘কথা ছিল কিছু পরে বড় চাকুরি করে পরিবারের দায়িত্ব নেবে মাসুদ। মাস্টাস পাস করে ঢাকাতেই ছোটখাট কম্পিউটারের কাজ করত। যা ইনকাম করত তা দিয়ে নিজে চলে বাড়িতেও টাকা-পয়সা পাঠাত। আর মাঝে মাঝে বড় চাকুরিতে যোগ দিতে পরীক্ষা দিত। অল্প দিনের মধ্যেই চাকুরি পাবার কথা ছিল। কিন্তু সেই চাকুরি আর করা হলো না। কিভাবে এই শোক মেনে নেব। আমার প্রাণের ছোট ভাইকে আর পাব না, এটা মানতে পারছি না।’
মাসুদের বন্ধু শাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা একই গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি। মাসুদ আমার চেয়েও অনেক মেধাবী ছিল। সে মুকসেদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে দর্শন বিভাগের অর্নাস ও মার্স্টাস শেষ করে। আমাকে মাঝে মাঝেই বলত, বড় চাকুরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেই চাকুরি আর হলো না। এর জন্যে বুকটা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।’
মাদারীপুর জেলা পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহণের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তের জন্যে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।