Logo
Logo
×

সারাদেশ

কানের দুলের জন্য শিশুছাত্রীকে হত্যা, গৃহবধূর আমৃত্যু কারাদণ্ড

Icon

লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩১ পিএম

কানের দুলের জন্য শিশুছাত্রীকে হত্যা, গৃহবধূর আমৃত্যু কারাদণ্ড

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্বর্ণের কানের দুল খুলে নেওয়ার সময় কান্না করলে মুখ চেপে স্কুলছাত্রী পপি সাহাকে (৭) হত্যা করেন রুনা আক্তার আঁখি নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন।

জানা গেছে, ঘটনার তিন মাস আগেই রুনা ও এমরান সাগরদি গ্রামের কাতার প্রবাসী আবুল কাশেমের বাড়িতে ভাড়া আসেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, তিন আনা স্বর্ণের কানের দুলের লোভে স্কুলছাত্রী পপিকে হত্যা করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রুনার স্বামীও এ মামলার আসামি ছিলেন। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এতে আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন। রায়ের সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

খালাসপ্রাপ্ত এমরান গাছ কাটার শ্রমিক ছিলেন। তিনি উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেরোয়া গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে। রুনা ওই গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাইভেট পড়ে এসে বাড়ির পাশেই পপি খেলছিল। তখন রুনা তাকে ডেকে ঘরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তার কানের দুলগুলো খুলে নেয় রুনা। এতে পপি কান্না শুরু করে। কান্নার শব্দ যেন কেউ শুনতে না পায় এজন্য তার মুখ-গলা চেপে ধরলে পপি মারা যায়। পরে তার মরদেহ চৌকির নিচে লুকিয়ে রাখেন রুনা। পরে স্বামী বাড়ি ফিরলে তাকে বিষয়টি জানান তিনি। এতে পপির মরদেহ গুম করার পরিকল্পনা করে তারা। পরে ঘরের দুটি দরজার ১টির বাইরে তালা ও অন্যটি ভেতর দিয়ে আটকে রেখা রুনা ও এমরান ঘরে অবস্থান করে।

এদিকে ভাত খাওয়ানোর জন্য পপিকে তার মা ববিতা রানী সাহা ডাকলেও কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। আশপাশসহ সম্ভাব্য স্থানে খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যদিকে দুপুরে রুনা ও এমরানের ঘর বন্ধ দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। এক নারী জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভেতর তাদের দেখতে পায়। পরে দরজা ভেঙে লোকজন ঘরে ঢুকে। এ সময় রুনা ও তার স্বামী পালাতে গেলে লোকজন আটক করেন। 

পরে চৌকির নিচে তাকালে বাম দিকে ঘাড় বাঁকানো অবস্থায় পপিকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাকে বের করতে গেলে বুঝা যায় পপির নিথর দেহ কৌশলে চৌকির নিচে বসিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন অভিযুক্তদের বাড়ির সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। ওই রাতে ববিতা বাদী হয়ে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন রুনা ও এমরানকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এছাড়া হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। একই বছর ১১ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রায়পুর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।

লক্ষ্মীপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম