ছয় বছরের শ্যালককে লুঙ্গি পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা!
বাসন (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:০৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গাজীপুরে দাম্পত্য কলহ ও কথা কাটাকাটির জেরে স্ত্রী ও চাচিশাশুড়ির সঙ্গে জেদ করে ৬ বছর বয়সি শ্যালককে নিজের পরিহিত লুঙ্গি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভগিনীপতির বিরুদ্ধে। পরে রাতের অন্ধকারে তার লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় গত ১৩ মার্চ এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে ১৫ মার্চ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। বুধবার ঘাতক দুলাভাইকে আটক করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে মহানগর পুলিশের ডিবি কার্যালয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
নিহত শিশুর নাম সাখাওয়াত। সে রংপুরের মিঠাপুকুর থানার বড় হযরতপুর এলাকার জাফর আলী ও লাকী বেগম দম্পতির ছেলে। তার বাবা-মা কর্মের খাতিরে গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় সপরিবারে বসবাস করে আসছে। ঘাতক দুলাভাইয়ের নাম তাহারুল মিয়া। তাহারুল তার স্ত্রীকে নিয়ে নিহতের পরিবারের পাশের বাসাতেই ভাড়া থাকতেন।
এ সময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত শিশু সাখাওয়াতের চাচাতো বোন শারমিনের সঙ্গে বছর দুয়েক আগে তাহারুল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। সম্প্রতি তা প্রকট আকার ধারণ করে। গত ১৩ মার্চ বিকালে গোসলের সময় লুঙ্গি দিতে দেরি হওয়ার জের ধরে তাহারুল ও শারমিনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে চাচিশাশুড়ি অর্থাৎ শিশু সাখাওয়াতের মা এ ব্যাপারে তাহারুলকে বকাঝকা করেন। তাহারুল এতে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, ঝগড়াঝাঁটির পর রাগান্বিত মাথায় তাহারুল বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় গেটের কাছে শিশু সাখাওয়াতকে দেখতে পায় ও মজা কিনে দেওয়ার কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। পরে নির্জন জায়গায় নিয়ে নিজের পরিহিত লুঙ্গি পেঁচিয়ে সাখাওয়াতকে হত্যা করেন। এরপর অন্ধকারে লাশ মাটিচাপা দিয়ে দেন তাহারুল।
পুলিশ জানায়, শিশু তাহারুলকে খুঁজে না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৪ মার্চ বাসন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের ও এর প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়। গত ১৫ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাসন থানার ইসলামপুর এলাকায় ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে মো. কবির হোসেনের মাটি ভরাট করা ফাঁকা জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় পা বের হওয়া ৫-৬ বছরের শিশুর লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে সাখাওয়াতের লাশ হিসেবে শনাক্ত করেন।
ঘটনার ৯ দিন পর ২২ মার্চ বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ক্লু-লেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও গাইবান্ধা থেকে সন্দেহভাজন আসামিকে আটক করতে সক্ষম হয় বাসন থানা পুলিশ। আটক আসামি তাহারুল ইসলাম অপরাধ স্বীকার করে নিজেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিবি দক্ষিণ) ইব্রাহিম খান, উপ-কমিশনার (অপরাধ উত্তর) তোরাব মোহাম্মদ শামসুর রহমান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাসন থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেনসহ কর্মকর্তারা।
