Logo
Logo
×

সারাদেশ

খালিয়াজুরীর ইউএনওসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে দুদুকে অভিযোগ

Icon

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩০ পিএম

খালিয়াজুরীর ইউএনওসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে দুদুকে অভিযোগ

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কার, ডুবন্ত বাঁধ ভাঙন বন্ধকরণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

খালিয়াজুরী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয় ময়মনসিংহ ও জেলা প্রশাসক নেত্রকোনা বরাবর পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন।

অন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা হচ্ছেন- বাপাউবো জেলা শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাপাউবো কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী, বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব ওবায়দুল হক, বাপাউবো কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী, বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব এনায়েত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মোশারফ হোসেন ইজহারুল, পিইসির সভাপতি বিধান কৃষ্ণ সরকার, সজল দে, মন্টু চক্রবর্তী, ফকরুল আলম, সুপ্রদীপ সরকার, ফুল মিয়া, রথীন্দ্র বর্মন, মন্তোষ বিশ্বাস, অঞ্জন সরকার, ফখলুল ইসলাম, ঝুটন সরকার, তাজুল ইসলাম, আশিকুর রহমান ডেন্ডু, মোকশুদ মিয়া, আহাদনুর মিয়া, আনোয়ার হোসেন, কবিন্দ্র সরকার, সুচিত্রা তরফদার, হারুণ মিয়া, নিরঞ্জন চন্দ্র সরকার, আবুল কালাম, কামরুল ইসলাম তালুকদার, নজরুল ইসলাম জলিল, প্রাণেশ সরকার ও আবু বকর।

অভিযোগে জানা গেছে, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের নাউটানা উপ-প্রকল্প, খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নে কীর্তনখোলা বেড়িবাঁধ, ছাতিয়ার হাওড়ের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ, উপজেলার মনাইজান কালিপুর থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত এবং নগর ইউনিয়নের কাওরদাইর হাওড়, মূল দাইয়ের বাঁধ, পাইতলাধোয়া হাওড়ের ফসল রক্ষা ডুবন্ত বাঁধের ভাঙন বন্ধকারণ ও মেরামত কাজসহ বিভিন্ন বাঁধের সংস্কার কাজ করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০২২- ২৩ অর্থবছরের এ সমস্ত কাজ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। খালিয়াজুরী উপজেলায় বোরো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতের জন্য ১১৫টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

ওই সমস্ত প্রকল্পের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাবিটা নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে কমিটি গঠন করে অর্থ হাতিয়ে নেন। এ ছাড়া ওই সমস্ত কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।

সুদীপ সরকার নং-২ পোল্ডারের ৮নং পিআইসি কমিটির একজন সভাপতি। তার বাড়ি প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। তিনি প্রকল্প এলাকার ভোটার বা কৃষক নন। খালিয়াজুরী প্রেস ক্লাবের সভাপতি শুভ সরকারের বাবা। ৩২নং পিআইসির সভাপতি ঝুটন সরকার পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। তিনিও উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতির চাচাত ভাই। ১১নং পিআইসির সভাপতি মন্তোষ বিশ্বাস একজন দিন মজুর ও ভূমিহীন। প্রকল্প এলাকায় তার কোনো জমি নেই। এমনি ধরনের নানা অনিয়ম করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে। 

এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয় ময়মনসিংহ ও ১৭ এপ্রিল নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক নেত্রকোনা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বাপাউবো নেত্রকোনা জেলা শাখার কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী ও বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকল্প কমিটি করার ব্যাপারে আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং বাপাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমা বলেন, উপজেলার কাবিটা প্রকল্পের সব কাজ যথাযথভাবে সরকারি নিয়ম মতো করা হয়েছে। কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রকল্প কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে শুনেছি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভিত্তিহীন এ সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, খালিয়াজুরীতে কাবিটা প্রকল্পের কাজ নিয়ে দুদকে অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। বিষয়টি দুদকই দেখবে। জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগের কপি এখনো আমি পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নেত্রকোনা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম