মেয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে জামাতার শিলের আঘাতে মারা গেলেন শ্বশুর
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ১১:০৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নেত্রকোনায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘুমিয়ে থাকা শ্বশুর আব্দুল জব্বারের মাথায় শিল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছেন জামাতা এটিএম নাজমুস সাকলাইন অপু। স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে জামাতার হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে মারা যান ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার বেড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার (৬০)।
শনিবার রাতে অপুর নেত্রকোনা শহরের নাগড়া বাসায় এ ঘটনায় আহত হন আব্দুল জব্বারের স্ত্রী হামিদা খাতুন (৫০) ও মেয়ে ছাবিকুন্নাহার সুইটি (৩২)। তারা বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আর অভিযুক্ত জামাতা একই এলাকার বালিয়াপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদিরের ছেলে এটিএম নাজমুস সাকলাইন অপু (৩৫)। অপু বর্তমানে নেত্রকোনা শহরের মধ্যনাগড়া এলাকায় থাকেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে এটিএম নাজমুস সাকলাইনের সঙ্গে সাবিকুন্নাহারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নাজমুস সাকলাইন তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চার প্রয়োগ করে আসছিল। সম্প্রতি যৌতুকের জন্য তিনি তার স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার সালিশও হয়। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার বিকেলে আবদুল জব্বার ও তার স্ত্রী হামিদা খাতুন নেত্রকোনার মধ্য নাগড়া এলাকায় মেয়ের বাড়িতে আসেন। পরে ওই দিন রাতে জামাতার সঙ্গে তাদের ঝগড়া হয়। পরে রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন তারা।
কিন্তু রাত ১২টার দিকে নাজমুস সাত্তার ঘরের থাকা মসলা বাটার শিল দিয়ে প্রথমে তার শ্বশুরকে মাথায় আঘাত করেন। এ সময় বিষয়টি টের পেয়ে তার শাশুড়ি ও স্ত্রী বাধা দিতে চাইলে তাদেরও তিনি মাথা ও শরীরে আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও আবদুল জব্বারের অবস্থা অবনতি হলে পরদিন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
এ ঘটনায় আবদুল জব্বারের ছোট ভাই আবদুল খালেক রোববার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাজমুস সাকলাইনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন তিনি।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. লুৎফুল হক বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাইয়ের লিখিত অভিযোগটি এখন মামলায় রূপান্তর করা হবে। অভিযুক্তকে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
