রাজশাহী সিটি নির্বাচন: প্রতীক পেয়েই প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৩, ১০:২৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন। প্রতীক পাওয়ার পরপরই প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রথমে আওয়ামী লীগ মনোনীত এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ বরাদ্দ করা হয়। এরপর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলমকে ‘হাতপাখা’, জাকের পার্টির প্রার্থী একেএম আনোয়ার হোসেনকে ‘গোলাপ ফুল’ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনকে ‘লাঙল’ প্রতীক বরাদ্দ করা হয়।
প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রার্থীদের সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েন। বের করা হয় মিছিল, প্রার্থীর নাম উল্লেখ করে চলে মাইকিং। এছাড়া সারা শহরে পোস্টার ও ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু হয়।
এর আগে প্রথমে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংরক্ষিত নারী আসনের ৪৬ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। কোনো প্রার্থী একাই কোনো প্রতীক চাইলে তাকে সেটি দেওয়া হয়। তবে কোনো প্রতীক একাধিক প্রার্থী চাইলে লটারি করা হয়। লটারিতে যে প্রার্থীর নাম ওঠে, সেই প্রার্থী পছন্দের প্রতীক পান।
প্রতীক বরাদ্দের শুরুতে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনে ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারাও দেখছেন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করছি।
প্রতীক পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী একটি দল। নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিকাশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন।
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া কাদিরগঞ্জে পিতা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ও মাতা মরহুমা জাহানারা জামানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।
এরপরই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাজশাহীজুড়ে প্রচারপত্র বিলির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় তার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো আছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমরাও আশাবাদী। আমাদের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। এতে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কিন্তু ইভিএমের ব্যাপারে আমাদের আস্থাও আছে, শঙ্কাও আছে। শঙ্কা হলো- এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় চলে যায়।
জাকের পার্টির প্রার্থী একেএম আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার প্রতীক ‘গোলাপ ফুল’। তাই প্রতীক পাওয়ার পর নগরবাসীকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রচার শুরু করা হয়েছে। তবে ইভিএমে ভোট হবে, কিন্তু এখনো ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে না। কিভাবে এতে ভোট দেওয়া হবে, সেটা আমাকেও প্রার্থী হিসেবে জানানো হয়নি। এটা নিয়েই আমার শঙ্কা যে সবাই ঠিকঠাক ভোট দিতে পারবে কিনা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, নির্বাচন কেমন হবে, সেটা এখনো বলতে পারছি না। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর জুমার নামাজ শেষে প্রচার শুরু করা হয়েছে। এছাড়া বিকাল ৫টায় নেতাকর্মীদের নিয়ে লাঙল মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন রাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৫২টি ভোট কেন্দ্রের এক হাজার ১৭৩টি কক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এবার মেয়র পদে চারজন ছাড়াও ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের জন্য ১১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএমে।
রাসিক নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ এবং নারী এক লাখ ৮০ হাজার ৯৭২। আর এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ৩০ হাজার ১৫৭ নতুন ভোটার।
