দোহার-নবাবগঞ্জে উজ্জীবিত জাতীয় পার্টি, নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা
আজহারুল হক, নবাবগঞ্জ
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৩, ১১:০৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গত ৫ জুন সোমবার ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন সম্পন্ন হয়। এরপর থেকেই দোহার নবাবগঞ্জে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে। নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরাও যেন জেগে ওঠেছেন। সেই সঙ্গে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সুধীজনের মধ্যে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।
রাজধানীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা নবাবগঞ্জের বর্ধনপাড়া এলাকায় অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে সম্মেলন যেন বিশাল জনসমুদ্রে রূপ নেয়। কমতি ছিল না কোনো সাজসজ্জারও। প্রচার প্রচারণায় ছিল গোটা এলাকা মুখর। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক কৃষক তাঁতী এবং ক্ষুদে ব্যবসায়ী সবার কাছে যেন সালমা ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ও জনসমর্থন বেড়েছে সেই আলোচনা মুখরিত।
দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদের উপস্থিতিতে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ভাই এবং জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি, জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ জাতীয় পার্টির একাধিক কো-চেয়ারম্যান ও দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের জাতীয় নেতারা ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইমলাম এমপিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দোহার নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনে একক দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেন।
এর ফলে হাজার হাজার নেতাকর্মী করতালির মাধ্যমে তাদের স্বাগত জানান। সালমা ইসলাম এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সাথে- এই স্লোগানে মুখরিত করে তোলে সম্মেলন প্রাঙ্গণ।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় নেতারা দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনে সালমা ইসলাম এমপিকে একক দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির নেতা সাওকাত হোসেন মোল্লা ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আইনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইমলাম এমপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এছাড়া রাজধানীর পাশে অবস্থিত এ উপজেলা দুটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর হবে ইনশাআল্লাহ।
দোহার উপজেলার জাতীয় পার্টির নেতা হায়দার ব্যাপারী বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও আমাদের নেত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বিগত সময়ে অবহেলিত দোহার ও নবাবগঞ্জের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। বিশেষ করে গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ, পুরাতন ভবনের সংস্কারসহ, আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার অগ্রগতি ও উন্নয়নে তার নিজস্ব অর্থায়নে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেন একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের নিরলস পরিশ্রমে বিগত সময়ে এ অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সংঘটিত হয়। শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ ও কালিগঙ্গা ইছামতি নদীতে বেশ কয়েকটি বৃহত্তম সেতু নির্মাণ করা হয়। এর ফলে নবাবগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে মানিকগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলার সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আমাদের দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষ প্রতি ঈদ ও পূজাপার্বণে সালমা ইসলামের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। আগামী দিনে তাকে এই এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত করতে পারলে অবহেলিত এলাকাটি উন্নয়নমুখী অঞ্চলে রূপান্তর হবে বলে আমরা মনে করি।
জাতীয় পার্টির নবাবগঞ্জ উপজেলা সভাপতি জুয়েল আহমেদ মনে করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির একজন কর্মী হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। বাংলাদেশের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জাতীয় পার্টির রয়েছে ব্যাপক অবদান। বিশেষ করে সালমা ইসলাম সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে একজন মানবিক নেত্রী হিসেবে উপাধি পেয়েছেন।
স্কুল শিক্ষক রাকিব বলেন, নারী নেত্রী হিসেবে সালমা ইসলামের গুণাবলী সাধারণ মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আগামীতে তার মতো একজন নেত্রী এ অঞ্চলের এমপি হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
সম্মেলনে উপস্থিত গৃহবধূ রাজিয়া বলেন, জীবনে কখনো কোনো এমপির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি কিন্তু অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম একজন সাধারণ মানুষের মতো কথা বলেন। সহজ সরল চিন্তার এই নেত্রী এমপি হলে আমাদের দুঃখ-কষ্টে তাকে কাছে পাব বলে মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলেন, এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সালমা ইসলামের জনপ্রিয়তা ব্যক্তিগত ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি সারা বছরই জনগণের পাশে থাকেন। আগামী দিনে তার মতো মুক্তমনা একজন নেত্রী আমাদের পাশে থাকলে দোহার-নবাবগঞ্জের উন্নয়ন কাজে সহায়ক হবে।
একজন সংবাদকর্মী জানান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের অভাব পূরণে সালমা ইসলাম সাধারণ মানুষের কথা মনে করে তাদের পাশে থাকেন। এটা নবাবগঞ্জ-দোহারবাসীর জন্য এক পরম পাওয়া। সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের কাছে তিনি যে আস্থা ও সমর্থন অর্জন করেছেন তা এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা তার আগামী দিনের চলার পথের সহযোগী হয়ে কাজ করতে চাই।
