Logo
Logo
×

সারাদেশ

বঙ্গবন্ধু-সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে ছবি শেয়ার রুয়েট কর্মকর্তার

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩২ পিএম

বঙ্গবন্ধু-সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে ছবি শেয়ার রুয়েট কর্মকর্তার

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জানাজায় মানুষের উপস্থিতির সঙ্গে সম্প্রতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতির তুলনা দেখিয়ে একটি কোলাজ ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) কর্মকর্তা মো. মিলনুর রশিদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে তার জীবনকর্মসহ বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে গত ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হেয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো জানাজার ওই ছবিটি শেয়ার করেন তিনি। এতে রুয়েটসহ পুরো রাজশাহীজুড়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।

অভিযুক্ত মো. মিলনুর রশিদ রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। এছাড়া রুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মো. মিলনুর রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের উদ্দেশে নয়, বরং নিজের ফেসবুকে বিষয়টি রেখে দেওয়ার জন্য শেয়ার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সত্য কথা বলতে ফেসবুক সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানিই না, বুঝিই না। তবে কোনো কিছু ভালো লাগলে আমার ফেসবুকে শেয়ার করে রেখে দেই।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন টেকনিক্যাল অফিসার হয়ে প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা নেই কেন জানতে চাইলে মো. মিলনুর রশিদ বলেন, এটা আমার মুর্খতা বা অজ্ঞতা। ফলে কোনো কিছু বুঝে এটা করিনি। জাস্ট শেয়ার করে রেখেছি।

শুধু মিলনুর রশিদই নন, সাঈদীকে নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন রুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবও।

এ বিষয়ে জানতে রুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক মো. আল বেরুনী ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফেসবুক ব্যবহার করেন না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি কখনো ফেসবুক চালাই না, বিষয়টি আমাকে কেউ অবগতও করেননি। ফলে বিষয়টি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ইথিক্সের বাইরে গিয়ে এমন কর্মকাণ্ড করলে আমাদের সঙ্গে থাকতে পারবে না। বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহা. ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেশের অন্য যেকোনো মানুষের তুলনা হয় না। সুতরাং একজনকে যুদ্ধাপরাধীর (সাঈদী) দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে জাতির পিতার তুলনা আমরা কোনোভাবেই মানতে পারি না। আমরা রুয়েট কর্মকর্তার এমন জঘন্য কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ রুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান রিপন বলেন, রুয়েটের ওই কর্মকর্তা জঘন্য অপরাধ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সংবিধান স্বীকৃত একটি নাম। তার সঙ্গে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত একজন আসামির তুলনা করা জঘন্য অপরাধের শামিল। জাতির পিতাকে নিয়ে এমন ধৃষ্টতা প্রদর্শনকারী রুয়েটের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা রুয়েট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে রুয়েটের বঙ্গবন্ধু পরিষদের অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে এ বিষয়ে দ্রুত আমরা আমাদের করণীয় ঠিক ঠিক করব।

রাজশাহী

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম