Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রী, ১৭ দিন পর লাশ হয়ে ফিরল স্বামী

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম

ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রী, ১৭ দিন পর লাশ হয়ে ফিরল স্বামী

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের খালে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজের ১৭ দিন পর সোমবার জেলে মোস্তাফিজুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনদের দাবি, আরাকান আর্মির সদস্যরা ওই জেলেকে অপহরণ করেছিল। 

লাশ দাফনের দুই দিন পরও এ ঘটনার শোক কোনোভাবেই যেন কাটেনি নিহতের স্ত্রী-সন্তানদের।

মোস্তাফিজুরের বড় ছেলে মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, অপহরণের পর বাবাকে জীবিত বা মৃত ফেরত পেতে ১৭ দিন নাফ নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে গেছেন। মোস্তফা বলেন, বাবার মৃত্যুতে আমি শোকে পাথর হয়ে গেছি। এর আগে বাবাকে গত ১৭ দিন রাতে-দিনে খুঁজেছি। বিভিন্নজনের কাছে সাহায্য চেয়েছি, পাইনি। মরার পরে নিউজ করে, পুলিশ তদন্ত করে কী হবে।

মোস্তাফিজুরের স্ত্রী খালেদা বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, যেদিন মাছ ধরতে গেল ওই দিন দুপুরে বাড়িতে এসে ভাত খাওয়ার কথা। ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছিলাম। একসঙ্গে মাছ ধরতে যাওয়া ছৈয়দ হোসেন এসে বলেন, মোস্তাফিজুরকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এখন বাচ্চাদের নিয়ে আমি কার দরজায় গিয়ে দাঁড়াব। ঘরে তো খাবার দাবার কিছুই নেই। 

কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন খালেদা।

মোস্তফা আরও বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে নাফ নদীতে অন্য জেলেদের সঙ্গে মাছ ধরতে যান তার বাবা। একপর্যায়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হলেও বাবার সন্ধান পায়নি। অপহরণকারীরা স্বজনদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেনি।

তিনি আরও বলেন, গত রোববার বিকালে উখিয়া উপজেলার রহমতেরবিল সীমান্তে চিংড়ি ঘেরে কাজ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম। একপর্যায়ে তিনি নাফ নদীর বেড়িবাঁধের ওপর মোস্তাফিজুর রহমানকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনি বিষয়টি স্বজনদের জানান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিজিবির সহায়তায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অপহরণকারীরা তাকে বেঁধে রাখায় অনাহারে মৃত্যুর পর লাশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফেলে রেখে গেছে।

উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মোস্তাফিজুরকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে মোস্তাফিজুরের শরীরে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

স্ত্রী লাশ স্বামী কক্সবাজার

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম