Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাজশাহীতে দাম বেড়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম

রাজশাহীতে দাম বেড়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের

সরকারি সরবরাহ বন্ধ থাকায় রাজশাহীতে বেড়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও উপকণের দাম। বিশেষ করে কনডম ও স্বস্তি নামের একটি ইনজেকশনের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, এক বছরে ওষুধের দাম যেমন অস্বাভাবিক বেড়েছে, তেমনি জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের দামও বেড়েছে। তবে ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে কনডম ও স্বস্তির সরবরাহ না থাকায় প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো এসব উপকরণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাধ্যমে তারা স্বল্পমূল্যে এসব সামগ্রী কিনতে পেরেছেন। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে কনডম ও স্বস্তির সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন।

রাজশাহীর সরকারি হাসপাতাল, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সরকারি ক্লিনিকগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিসেম্বর থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণের সব উপকরণ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আগে গ্রামের মানুষ এসব সামগ্রী সুলভে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কিনতে পারতেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেও তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ পেতেন। কিছু উপকরণ পেতেন মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে। উপকরণের ঘাটতি পড়ায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা রায়হান আলী বলেন, আগে সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ক্লিনিক থেকে কম দামে কনডম ও স্বস্তি ইনজেকশন কিনতে পারতেন। সরকারিভাবে সরবরাহ করা কনডমের গুণগত মান ভালো। কিন্তু গত কয়েক মাস সরবরাহ বন্ধ আছে। ফার্মেসি থেকে কেনা কনডমের দাম কয়েকগুণ বেশি হলেও মান ভালো নয়।

রায়হান আলী আরও বলেন, সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কয়েকবার ঘুরেও কনডম পাওয়া যায়নি। তারা বলছেন, সরবরাহ নেই।

এদিকে সরকারি একটি হাসপাতাল ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিবার পরিকল্পনা অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সব সময় সরকারি কনডম ও স্বস্তি ইনজেকশনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই এটার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কিন্তু সরবরাহ বন্ধের কোনো কারণ তাদের জানানো হয়নি। কবে নাগাদ সরবরাহ আসবে সে বিষয়েও কিছু বলা হচ্ছে না।

এদিকে নগরীর কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও এসএমসির ৩ পিস কনডমের এক প্যাকেটের দাম ছিল ১৫ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। এছাড়া ক্লাসিক প্রতি প্যাকেট ৩৫-৪৫ টাকা, ইউঅ্যান্ডমি ৪৫-৭০ টাকা, সেনসেশন ৩৫-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্য ব্র্যান্ডের কনডমের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া কেউ কেউ লিখিত মূল্যের উপরে ইচ্ছেমতো দাম সংবলিত মূল্য স্টিকার লাগিয়েও বিক্রি করছেন।

রাজশাহীর ওষুধ বিক্রেতা তানভীর আলম বলেন, কনডমের দাম হঠাৎ করেই বেড়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো কারণ না বললেও মূল্য বেড়েছে বলে শুধু বলা হচ্ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের দাম বাড়ায় বিক্রি কমে গেছে।

রাজশাহী পরিবার কল্যাণ দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কনডমের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কি কারণে তা তাদের জানা নেই। একটা কনডমের উৎপাদন খরচ সর্বোচ্চ ৩-৫ টাকার মধ্যে। কিন্তু বিভিন্ন নামে বাজারে এসে তা ১০-২৫ টাকা হয়ে যাওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিচালক মো. এনামুল হক জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত কনডম ও স্বস্তি ইনজেকশনের সরবরাহ ছিল। পরে কি কারণে সরকারি কনডমের সরবরাহ বন্ধ হয়েছে তা জানা নেই। রাজশাহীতেও কয়েকদিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তিনি।

রাজশাহী

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম