২৮ বছর পর খারিজ কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দীর্ঘ ২৮ বছর পর খারিজ হয়ে গেল বহুল আলোচিত কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা। ১৯৯৬ সালের ১১ জুন রাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের নিউ লাল্যাঘোনা নামক গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন নারীবাদী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমা; কিন্তু আজও হদিস মেলেনি অপহৃতের।
ঘটনার পরদিন ১২ জুন কল্পনার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা বাদী হয়ে বাঘাইছড়ি থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ ও বাদীর আপত্তি নামঞ্জুর করে মঙ্গলবার মামলাটি খারিজ করে দেওয়ার আদেশ দেন রাঙামাটির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক ফাতেমা আক্তার মুক্তা।
তবে বাদীর আইনজীবী জুয়েল দেওয়ান জানিয়েছেন, আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বাদীর নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এতে আমরা অসন্তুষ্ট। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।
এদিকে মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমার ‘নারাজি আবেদন’ নামঞ্জুর করে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
বিবৃতিতে ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা মন্তব্য করে বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম আদালত) পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে পক্ষপাতদুষ্ট, চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস ও তার দোসরদের দায়মুক্তি দেওয়ার ন্যক্কারজনক নজির। এ রায় কারোর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হিল উইমেন্স ফেডারেশন তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিবাদী জনতা লড়াই চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ মে পুলিশ আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার পুনরায় তদন্তের দাবি করেন মামলার বাদী ও অপহৃতার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা। এরপর ২০১৬ সালে আদালত বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে রাঙামাটির তৎকালীন পুলিশ সুপার সৈয়দ তারিকুল হাসানকে মামলাটির পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেন। এতে দুই বছর তদন্ত শেষে ২০১৮ সালে কারো বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ার তথ্য জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ সুপার। এতেও নারাজি আবেদন দিয়েছিলেন মামলার বাদী কল্পনার ভাই কালিন্দী কুমার।
মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমা বলেন, আমি আদালতের এ রায় মানতে পারিনি। আমি আমার বোনের অপহরণের সুষ্ঠু বিচার চাই। বোনের অপহরণ বিচার পেতে আমি আবার উচ্চ আদালতে যাব।
