Logo
Logo
×

সারাদেশ

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাচন: চা বাগানের ভোটেই জয়-পরাজয়

Icon

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৪, ০২:৩২ এএম

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাচন: চা বাগানের ভোটেই জয়-পরাজয়

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য মরিয়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পদত্যাগী প্রার্থী। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা ও কর্মকৌশল। প্রচারণার শেষ দিকে উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রচারের মূলকেন্দ্র হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে ভোট এবং ২৩টি চা বাগান। 

উপজেলার ২ লাখ ৪৮ হাজার ভোটারের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট ৬৫ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে চা বাগানে ৫১ হাজারেরও বেশি ভোটার রয়েছেন। ফলে চা বাগানসহ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে প্রার্থীরা পদচারণা, পোস্টার আর মাইকিংয়ে জোর দিচ্ছেন।

চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ঘোড়া প্রতীকের বিএনপি পদত্যাগী সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকের মো. আবু তাহের। 

চান্দপুর চা বাগানের শ্রমিক নেতা নিপেন পাল বলেন, বিগত ১০ বছর আমরা যাকে পাশে পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে কাছে পাব, তাকেই ভোট দেব। 

বেগম খান চা বাগানের সাবেক ইউপি সদস্য লক্ষীচরণ বাককিত বলেন, যাকে ভোট দিলে আমাদের উন্নয়ন হবে, যিনি বিগত দিনে উন্নয়ন করেছেন আমরা তাকেই ভোট দিতে প্রস্তুত। 

আমু চা বাগানের ইউপির সদস্য যুবরাজ ঝড়া বলেন, চা বাগানের মানুষ খুবই অবহেলিত। যাদের ভোট দিলে অবহেলিত চা জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করবে, সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়াবে, আমরা এমন লোককেই ভোট দেব। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই চা শ্রমিকদের পছন্দ।

চেয়ারম্যান আবু তাহেরের কৌশল হচ্ছে, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে নিরাপদে ভোট দেওয়া এবং জয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক ও চা বাগানের  ভোট আদায় করা। তবে ভোটাররা খুবই সতর্ক। সার্বিক বিষয় মাথায় রেখে তাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করতে চান।

প্রচারণার কৌশলে পিছিয়ে নেই বিএনপি পদত্যাগী প্রার্থী লিয়াকত হাসানও। 

দেওরগাছ বাজারের ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া জানান, এখানে আনারস প্রতীকের ভোটার বেশি। কারণ, চা বাগানের ভোটার সবাই একজোট।

লিয়াকত হাসান ও আবু তাহের দু’জনই বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে সৈয়দ লিয়াকত হাসান দুই বার চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বে ছিলেন। আবু তাহের ২০০৩ সালে দেওরগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করে এখনো আলোচনায় আছেন। 

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে সৈয়দ লিয়াকত হাসান বলেন, ভোট দেওয়া জনগণের অধিকার, তারা নির্ভয়ে ভোট দিতে যাবেন– এটাই প্রত্যাশা। দলে বেদলে আমি ভোট আশা করছি।

মো. আবু তাহের বলেন, চুনারুঘাট উপজেলায় চা জনগোষ্ঠীসহ সনাতন ধর্মের ভাইবোনদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নে এবার উপজেলা নির্বাচনে তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষকে তাদের রায় দিয়ে স্মার্ট চুনারুঘাট উপজেলা গড়তে প্রস্তুত আছেন।

এছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুর রহমান চৌধুরীও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি এর আগে জনপ্রতিনিধি না হলেও এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের মনোনীত প্রার্থী রায়হান আহমেদ ও হাবিবুর রহমান জুয়েলও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চা বাগানসহ সনাতন সম্প্রদায়ের ভোটার যেদিকে মোড় নেবে, ওই প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি। এই আসনের সংসদ নির্বাচনেও এটা দেখা গেছে।
 

উপজেলা নির্বাচন বিএনপি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম