প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে শিক্ষিকার মামলা
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের ভাঙ্গা কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন আরেক নারী শিক্ষক। ৯ জুন ফরিদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালতে প্রতারণার অভিযোগ এনে তিনি মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার সকালে শিক্ষিকা সাহানা পারভীন যুগান্তরকে এ তথ্য জানান।
মামলায় আসামিরা হলেন- প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত, তার স্ত্রী ভাঙ্গা সরকারি কেএম কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষিকা সঞ্চিতা দত্ত ও বিদ্যালয়ের তৎকালীন ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯৯৭ সালের ৪ জুন ভাঙ্গা কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন ট্রেড শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন বাদী। এরপর সেখানে দীর্ঘ ১০ বছর শিক্ষকতা করেন। পরে ২০০৭ সালের ২০ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পরে ১০১৮ সালের ৯ অক্টোবর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তাকে পুনর্বহালের জন্য নোটিশ দেয়; কিন্তু সাহানা পারভীনের কাছে পুনর্বহাল ও তার প্রাপ্ত ১২ বছরের বেতনের সরকারি অংশ এবং কারিগরি অধিদপ্তরের জন্য কিছু কাগজপত্রসহ ১০ লাখ টাকা দাবি করে।
পরে সাহানা পারভীন স্থানীয়দের নিয়ে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বাসায় গিয়ে ১০ লাখ টাকা দেন। টাকা লেনদেনের সময় প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রীর এবং ধর্মীয় শিক্ষক জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। টাকা দেওয়ার পরও শিক্ষক সাহানা পারভীন ৫-৬ বছর ধরে ঘুরতে থাকেন; কিন্তু চাকরিতে পুনর্বহাল এবং ১২ বছরের বেতনের সরকারি অংশ কোনোটাই পাননি। এরপর ওই শিক্ষিকা কোনো উপায় না পেয়ে আদালতে মামলা করেন।
মামলার বাদী সাহানা পারভীন যুগান্তরকে জানান, আমার বিষয়টি ইতোপূর্বে একাধিকবার স্কুলের সভাপতি, জেলা শিক্ষা অফিস, ভাঙ্গা পৌরসভার মেয়রসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে জানিয়েছি, কিন্তু কেউ কোনো কর্ণপাত করে নাই। এ কারণে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত মোবাইল ফোনে জানান, সাহানা পারভীনের কাছ থেকে কোনো টাকাপয়সা নেওয়া হয়নি। মোবাইল ফোনে বেশি কিছু বলতে পারছি না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয় প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী ভাঙ্গা সরকারি কেএম কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক সঞ্চিতা দত্ত বলেন, তিনি সাহানা পারভীন নামে কাউকে চিনেন না। তাই টাকাপয়সা লেনদেনের প্রশ্নই আসে না।
এসব বিষয়ে কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন ধর্মীয় শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে কাজী শামসুন্নেছা বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী জোবায়দা লতিফের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন জানান, ঘটনাটি ভাঙ্গায় যোগদানের পূর্বের বিষয়। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই বাস্তবায়ন হবে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি মামুন আল রশিদ জানান, বিষয়টির তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
