Logo
Logo
×

সারাদেশ

সফরকালে উপদেষ্টারা

রাঙামাটির ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হবে

Icon

সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম

রাঙামাটির ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হবে

২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে এতে কারা জড়িত- তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক তালিকা নিরুপণ করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেবে। তাছাড়া আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শনিবার রাঙামাটি সফরকালে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম। 

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল হাফিজ, পুলিশের আইজিপি ময়নুল ইসলাম, মেজর জেনারেল ফয়জুর রহমান (ডিজি, ডিজিএফআই), মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ (ডিজি, এনএসআই), মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ (ডিজি, বিজিবি) সামরিক, প্রশাসনিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 

মতবিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম।

মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ বলেন, রাঙামাটি দেশের একটি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির অঞ্চল। এখানে সবাই শান্তি ও সম্প্রীতি চায়, সেটা বিভিন্ন জনের বক্তব্যে স্পষ্ট হওয়া গেছে। কিন্তু এর ছন্দপতন কোথায় তাও উঠে আসছে, যেটা হলো এখানকার দেশের কিছু কুচক্রী মহল পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট ঘটাতে চায়। ২০ সেপ্টেম্বরের রাঙামাটিতে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা তা কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা এখন বর্তমান সরকারকে দুর্বল করে দিতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সেই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। 

তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির অনাকাঙ্খিত ঘটনায় যারা জড়িত সেব দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। এতে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা দেবো। আমরা রাঙামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলের সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করতে চাই। এজন্য সবাইকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সহযোগিতা দিতে হবে। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাঙামাটিতে কোনো অবস্থাতেই আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে দেওয়া হবে না। এ ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারবে না। যারা এখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতির চেষ্টা করবে তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে। তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেব না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যারা অপরাধ করবে তাদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। সম্প্রীতি রক্ষায় সবাইকে আন্তরিক হকে হবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। ২০ সেপ্টেম্বরের পুরো ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হবে। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, যে কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আঘাত হলে তা কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। যারা এ ধরনের কোনো কিছু করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।   

শনিবার দুপুরে রাঙামাটি রিজিয়নের প্রান্তি হল রুমে জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত ওসমান, সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার, চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, জনসংহতি সমিতির জেলা সভাপতি ডা. গঙ্গামানিক চাকমা, জেলা জাতীয় পার্টিও সভাপতি হারুনুর রশিদ মাতব্বর, জেলা জামায়াতের আমির আবদুল আলীম, সাংবাদিকদের পক্ষে সুশীল প্রসাদ চাকমা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং, বিশিষ্ট আইনজীবী প্রতীম রায় পাম্পু, সিভিল সার্জন ডা. ইূয়েন খীসা, হেডম্যান থোয়াই অং মারমাসহ ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রধিনিধিরা।

রাঙামাটি তদন্ত

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম