উলিপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
দেড় বছর পর আসামিকে আটক করে পুলিশে দিলেন নিহতের বাবা-মা
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে দেড় বছর পর হত্যা মামলার প্রধান আসামি জাহিদ হোসেনকে (৩৩) আটক করে পুলিশে দিলেন নিহতের স্বজনেরা।
অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ সময় ধরে আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বুধবার উলিপুর পৌর শহর জোদ্দারপাড়াস্থ এলাকা থেকে ওই আসামিকে আটক করেন নিহতের পিতা-মাতা। এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তুলে বুধবার সন্ধ্যার দিকে পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
মামলা ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উমানন্দ মিয়াজীপাড়া গ্রামের ফয়জার রহমানের ছেলে সুজন মিয়ার সঙ্গে ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের দাড়ারপাড় এলাকার আব্দুল হামিদের মেয়ে হাবিবা বেগমের (২৩) বিবাহ হয়। বিয়ের প্রায় আট মাস পর হাবিবা বেগম পরীক্ষা দেয়ার কথা বলে পিতার বাড়িতে চলে যান।
এসময় স্বামী সুজন ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে যান। ২০২৩ সালে ৬ মার্চ সুজন ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরলে দাড়ারপারস্থ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে ডেকে নেন। এরপর দুইদিন তাকে আটকিয়ে রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্মমভাবে নির্যাতন করেন।
এ ঘটনায় সুজনের পরিবারের লোকজন জানতে পেরে ৭ মার্চ জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় সুজন মিয়া মুমূর্ষু অবস্থায় থাকায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ মার্চ সুজন মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফয়জার রহমান বাদী হয়ে নামীয় ৮জন ও অজ্ঞাত চারজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে প্রধান আসামি জাহিদ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা।
এদিকে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে মানববন্ধনে নিহত সুজনের পিতা ফয়জার রহমান অভিযোগ করে বলেন, মামলার পর থেকে প্রধান আসামি জাহিদ হোসেনসহ এজাহার নামীয় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় থানায় গিয়ে আসামিদের তথ্য দিয়ে গ্রেফতারের দাবি জানানো হলেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশ নিশ্চুপ ছিল।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ আসামী গ্রেফতারে তৎপর ছিল। বাদী যখনি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে আমরা তখনি সহযোগিতা করেছি।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা আবেগের থেকে এটি করেছে। তাদের অভিযোগ সঠিক নয়।