ভ্রমণ ভিসায় কম্বোডিয়া নিয়ে প্রতারণা
লক্ষ্মীপুরে ‘দালালের’ বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি ভুক্তভোগীর
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভ্রমণ ভিসা দিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে কম্বোডিয়া পাঠিয়ে প্রতারণার অভিযোগে লক্ষ্মীপুরে কাশেম আলী নামে এক ‘দালালের’ বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের একটি পত্রিকা
কার্যালয়ে প্রতারিত ৪ যুবক এ আয়োজন করেন। এ সময় তারা কাশেম আলী ও বেলাল হোসেন ভূঁইয়া
নামে দুই ব্যক্তির বিচারসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী যুবকরা হলেন- সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চরলামছি
গ্রামের জাবেদ হোসেন, জুয়েল হোসেন, জয় চন্দ্র সরকার ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাছপুর
গ্রামের সুদেব চন্দ্র বণিক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী জাবেদের বাবা আবু
তাহরে, জয়ের মা বকুল রাণী সরকার ও সুদেবের শাশুড়ি দুলু রাণী সরকার।
জাবেদ বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দর্জির কাজের কথা বলে ৪ লাখ ১৫
হাজার টাকায় কাশেম আলী আমাকে কম্বোডিয়া পাঠায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারি আমাকে ১ মাসের
ভ্রমণ ভিসায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাইলে তার লোকজন সেখানে আমাকে মারধর করে। পরে
আমাকে ৯ দিন কাজ করিয়ে কিছু টাকা দেয়। ওই ভিডিও দেখিয়ে আমার এলাকার আরও কয়েকজনকে কাশেম
কম্বোডিয়ায় নেয়। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে আমি আর কাজ করতে পারছি না। এ বিষয়ে জানতে কাশেমের
সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তিনি আমার বাবাকে মারধর
করে স্ট্যাম্পে আঙুলের ছাপ নিয়ে আমাকে আনার ব্যবস্থা করে দেয়।
তিনি বলেন, কম্বোডিয়া থেকে আসতে আমার বিমান ভাড়া আর ৬৫ হাজার
টাকা খরচ হয়েছে। এসব ঘটনায় সোনালী এন্টারপ্রাইজ নামের ট্রাভেলসের মালিক বেলাল হোসেন
ভূঁইয়াও জড়িত।
জাবেদের বাবা আবু তাহের বলেন, কাশেম আমাকে মেরে আঙুলের ছাপ
নিয়েছে। পরে ৬৫ হাজার টাকা দিলে আমার ছেলে তাদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে দেশে আসে।
জাবেদ, জয় ও সুদেব জানান, তারা প্রত্যেকে ৪ লাখ ১৫ হাজার
টাকা করে কাশেমকে দিয়েছেন। গত ১ অক্টোবর তাদের ফ্লাইট ছিল কিন্তু ওই দিন তা হয়নি। সেদিন
রাত তাদের সোনালী এন্টারপ্রাইজের মালিক বেলাল হোসেন ভূঁইয়ার কাছে রাখা হয়। পরদিন তাদের
একটি ফ্লাইটে করে কম্বোডিয়ায় নেওয়া হয়। সেখানে বিমানবন্দরেই বেলালের এজেন্ট তাদের কাছ
থেকে পাসপোর্ট নিয়ে যায়। এরপর তাদের নিয়ে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখে। পরে সেখান থেকে
তাদের অন্যত্র নিয়ে রাখা হয়। ভিসার মেয়াদের বিষয়টি জানতে পেরে বেলালের এজেন্টের কাছে
জিজ্ঞেস করলেই তাদের মারধর করা হতো। পরে কৌশলে অন্যান্য লোকের মোবাইল নাম্বার দিয়ে
বাড়িতে যোগাযোগ করে। বাড়ি থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে নিয়ে তারা দেশে ফেরত আসেন।
সোনালী এন্টারপ্রাইজের মালিক বেলাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওই
চার যুবক আমার ট্রাভেলসে ম্যানপাওয়ার করেনি। বেলাল নামে আমার এক আত্মীয় কম্বোডিয়ায়
থাকে। তিনিই তাদের সেখানে নিয়েছেন, কাজও দিয়েছেন কিন্তু তারা যেখানে থাকতো, সেখানে
পাশেই কম্বোডিয়ার লোকজনকে মারধর করে তারা। তবুও তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু
তারা থাকেনি, চলে আসছে। আমার কাছে তারা যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চেয়েছে, আমি শুধু সহযোগিতা
করেছি। তাদের অভিযোগ সত্য নয়।
অভিযুক্ত কাশেম আলী বলেন, কম্বোডিয়ায় গিয়ে কয়েক দিন পরই
ওই চার যুবক চলে আসে। কাজ নিয়ে দেওয়ার কথা বললেও তারা থাকেনি। এখন তারা ক্ষতিপূরণ চাচ্ছে।
যিনি তাদের নিয়েছেন আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। এ নিয়ে বসে সমস্যা সমাধান করা হবে।
