ডিভোর্সি পুত্রবধূকে দেখতে গিয়ে বর্বরতার শিকার নারী, ভিডিও ভাইরাল

যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৬ পিএম
-67a0f778b52bd.jpg)
যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনায় ফজিলা চম্পা (৪৫) নামে এক নারীর মাথার চুল কেটে দিয়েছে ডিভোর্সি পুত্রবধূর পরিবারের লোকজন। এ সময় তাকে মারপিট ও মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতন করা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় ঝিকরগাছা উপজেলার বেনেয়ালি গ্রামে ডিভোর্সি পুত্রবধূকে দেখতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন ওই নারী। নির্যাতিত নারী ঝিকরগাছা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ঝিকরগাছার বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা। সোমবার তাদেরকে কারাগারে সোপর্দ করা হয়েছে।
ভিকটিম ফজিলা খাতুন ঝিকরগাছা উপজেলার চাপাতলা গ্রামের তোরাব মোড়লের মেয়ে।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ওসি মো. বাবলুর রহমান খান বলেন, ভিকটিম ফজিলা খাতুন ডিভোর্সি পুত্রবধূ বিথিকে দেখতে তার নতুন স্বামীর বাড়ি গিয়েছিলেন। এ সময় বিথির স্বামী ও পিতার বাড়ির লোকজন আটকে রেখে ফজিলা খাতুনের মাথার চুল কেটে দেয়। একইসঙ্গে তাকে মারপিট করা হয়। এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এজাহারনামীয় চার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভিকটিম ফজিলা খাতুনের অভিযোগ, তার ছেলে রায়হানের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের মেয়ে বিথির দুই বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর বিথির একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ফজিলা বেগম বেনেয়ালি গ্রামে তার সাবেক পুত্রবধূ বিথিকে দেখতে যান। এ সময় বিথির নতুন স্বামী শিমুল হোসেন, চাচি শারমিন আক্তার রুমি, চাচিশাশুড়ি রনি বেগম, মা রহিমা বেগমসহ তার স্বামী ও পিতার বাড়ির লোকজন মিলে ফজিলা বেগমের মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে কালি লেপন করে দেয়। এ সময় তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।
সেখানে উপস্থিত আরও অনেক নারী ও পুরুষ পুরো ঘটনা ভিডিও করতে থাকেন। এমন বর্বরতার সময় অনেকে উল্লাস করতে থাকেন। শুধু মারপিট করেই তারা থেমে থাকেননি। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে শিমুলের বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং সন্ধ্যার পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কোথাও অভিযোগ করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখায় অভিযুক্তরা। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয় গদখালি ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আবুল কাশেম বলেন, শুনেছি, তাবিজ কবজ (যাদু টোনা) সন্দেহে ওই নারীকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। এভাবে একজন মানুষকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করেছে।