সিএমপির সংবাদ সম্মেলন
ছাত্রদল-শিবির কর্মী হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর জসিম
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০২:০৩ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদল কর্মী ওয়াসিম আকরাম ও শিবিরকর্মী ফয়সাল আহমেদ শান্ত হত্যাসহ মোট দেড় ডজন মামলার আসামি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম। গণঅভ্যুত্থানের পর নানা স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ আশ্রয় নেন রাজধানীর অভিজাত এলাকা বসুন্ধরায়।
সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী কারাগারে থাকলেও বসুন্ধরায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে আলিশান জীবনযাপন করছিলেন পাহাড়খেকো জসিম। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে গিয়েও নগর পুলিশের বিশেষ একটি টিম তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শুক্রবার সকালে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উত্তর বিভাগের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৬ জুলাই নগরীর ষোলশহর ও মুরাদপুর এলাকায় জসিমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে সাবেক কাউন্সিলর জসিম। এ ঘটনায় সেদিন ছাত্রদল কর্মী ওয়াসিম আকরাম, শিবিরকর্মী ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। হামলায় ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীও গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও বলেন, জসিমের বিরুদ্ধে সিএমপির বিভিন্ন থানায় মোট ১৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা আছে দুটি, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে তিনটি, চাঁদাবাজির দুটি, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি, বিস্ফোরক আইনে দুটি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে দুটি মামলা আছে। এছাড়া অন্যান্য ধারায় আরও ছয়টি মামলা রয়েছে।
আমিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে- পুলিশের হাতে গ্রেফতার তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীকে ছাড়াতেই তিনি নিজেই ধরা দিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। আমি নিজে সেখানে ছিলাম। তিনি আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
বুধবার রাতে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা এলাকা থেকে জহুরুল আলম জসিমকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম আনা হয়।
জসিম চসিকের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর আকবর শাহ থানার একে খান মোড়ে ‘গ্রীন গুলবাহার টাওয়ার’ নামে একটি ১৪ তলা আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। রাতভর ভবনটির প্রতিটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েও জসিমকে পাওয়া যায়নি। পরদিন দুপুরে ওই বহুতল ভবনে অভিযান চালিয়ে জসিমের ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে গ্রেফতার করেছিল ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
