Logo
Logo
×

সারাদেশ

হাওড়ে মাছ লুট গাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ আহত অর্ধশত, আটক ৫০

Icon

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

হাওড়ে মাছ লুট গাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ আহত অর্ধশত, আটক ৫০

নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চল খালিয়াজুরীতে মাছ শিকারী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় শতাধিক অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থল থেকে ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। 

শনিবার দুপুরে উপজেলার রসূলপুর গ্রামের পাশে ধনু নদীর ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চল খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার বিভিন্ন ইাজারাকৃত জলমহালের মাছ লুটপাট করার মহোৎসব চালিয়েছে এক শ্রেণির লোকজন। 

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিদিনিই ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরিপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার হাজার হাজার লোকজন সমাবেত হয়ে হাওড়ের ইজারাকৃত বিলের মাছ লুট করছে। 

গত এক সপ্তাহে মদন উপজেলার নূরেশ্বর বিল, খালিয়াজুরী উপজেলার কির্তনকলা বিল, কারি বিল, উচাবাইদা বিল, হাইলা বিলসহ বেশ কয়েকটি ইজারাকৃত বিলের মাছ লুট করেছে মাছ শিকারীরা। প্রশাসনের লোকজনের বাধা উপেক্ষা করেই প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটছে। যেসব বিলের মাছ লুট হয়েছে সেগুলোর ইজারা মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। 

অন্যদিনের মতো শনিবার সকালে খালিয়াজুরী উপজেলার ইজারাকৃত কাঠালজান ও মরাগাঙ্গের মাছ লুট করার জন্য ধনু নদীর পাড়ে জমায়েত হয় হাজারো লোকজন। 

পরে মাছ শিকারীরা রসূলপুর ফেরিঘাটের পাশে তাদের পরিবহণের শতাধিক পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, হেনট্রলি, মোটরসাইকেল রেখে ধনুী নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ফেরিঘাটের লোকজনের সঙ্গে মাছ শিকারীদের তর্কবির্তকের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এতে স্থানীয় লোকজন অংশ নিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়। 

পরে বিক্ষুব্ধ জনতা মাছ শিকারীদের পরিবহণের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গাড়িতে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাছ শিকারীরা ফেরি দিয়ে ধনু নদী পার হওয়ার সময় তাদের গালমন্দ করে। প্রতিবাদ করায় তাদের মারধর করতে থাকে। এ সময় সংঘর্ষ বাধলে হাজারো জনতা রসূলপুর ফেরিঘাটের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করে। 

পরে রসূলপুর গ্রামে লোকজনের বসত বাড়িতে হামলা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিক্ষুব্ধ জনতা মাছ শিকারীদের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

আহত একাধিক মাছ শিকারী জানান, আমরা খবর পেয়ে মাছ ধরার জন্য ধনু নদীর পাড়ে যাই। সেখানে হাজার হাজার লোকজন ছিল। হঠাৎ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে স্থানীয় লোকজন একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সবাইকে মারধর শুরু করে। তারা আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নয়ন ঘোষ জানান, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ১৫-২০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকার করতে গিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। সব রোগী একসঙ্গে আশায় নাম পরিচয় এখনো সঠিকভাবে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনেক রোগী আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। 

খালিয়াজুরী স্থানীয় সংবাদকর্মী মৃনাল কান্তি জানান, খালিয়াজুরী হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৫-২০ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া থানাপুলিশ ৫০ জনকে আটক করেছে। 

খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, আমি ঘটনাস্থলে আছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর ও আহত সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হচ্ছে। পুরো তথ্য দিতে সময় লাগবে।

মাছ লুট

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম