অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ
রাজশাহীর দুই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং তানোর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার রাজশাহীর দুদক অধিক্ষেত্রে মামলা দু’টি দায়ের করেন। দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফজলুল বারী মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে এই দুই উপজেলা চেয়ারম্যান রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর অন্যতম দুর্নীতি সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন এবং নিজেরাও দুর্নীতি করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গোদাগাড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি পৌর এলাকার জোতগোসাই গ্রামে। বাবার নাম শাহজাহান বিশ্বাস। জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। অনুসন্ধানকালে দুদক জাহাঙ্গীর আলমের স্থাবর ও অস্থাবর মিলে মোট ৭ কোটি ৭১ লাখ ১১ হাজার টাকার সম্পদের খোঁজ পায়। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। দায়-দেনা মিটিয়ে তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। দুদক জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে।
অন্যদিকে একইদিনে দুদক তানোর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর রশিদ হায়দার ময়নার বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ময়নার স্থায়ী ঠিকানা তানোরের চৌরখোর গ্রাম। বাবার নাম হাফিজুর রহমান। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ময়নার বিরুদ্ধে ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা গেছে, অনুসন্ধানকালে দুদক ময়নার স্থাবর ও অস্থাবর মিলে ১ কোটি ১৪ লাখ ৪২ হাজার টাকার মোট সম্পদের খোঁজ পায়। এর মধ্যে ৪২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা স্থাবর ও ৬৯ লাখ ৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। দায়দেনা মিটিয়ে ময়নার বিরুদ্ধে ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ময়নার বিরুদ্ধেও দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ সংশ্লিষ্ট আইনে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে যুবলীগ নেতা ময়না ও জাহাঙ্গীর আলম পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে একাধিকবার নোটিশ জারি করে দুদক সম্পদের হিসাব দাখিলের জন্য নির্দেশ দিলেও তারা তা দেননি। ইতোমধ্যে এই দুই নেতার বিরুদ্ধে জুলাই আগস্ট আন্দোলনে হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে নিজ নিজ থানা এলাকায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।