Logo
Logo
×

সারাদেশ

অবৈধভাবে চললেও মোবাইল কোর্টে বৈধতা পেল বেসরকারি হাসপাতাল

Icon

নজরুল ইসলাম পলাশ, মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

অবৈধভাবে চললেও মোবাইল কোর্টে বৈধতা পেল বেসরকারি হাসপাতাল

ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিক পরিচালনা করার বিধান নেই। কেউ পরিচালনা করলে তা অবৈধ হবে। অথচ মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সিটি হাসপাতালটি অবৈধভাবে (পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া) পরিচালিত হলেও জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সঠিকভাবে চলছে বলে ঘোষণা দিয়ে এসেছে।

এদিকে তথ্য অধিকার আইনে চাওয়া তথ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, সিটি হাসপাতালের পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। তাহলে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট কিসের বিনিময়ে এই হাসপাতালের বৈধতা দিল, এমন প্রশ্ন এখন সবমহলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকায় ৬তলা ভবনের চলছে সিটি হাসপাতালের কার্যক্রম। জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালসহ ঢাকা থেকে সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন এই হাসপাতালে। জেলার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও চিকিৎসা দিচ্ছে এই হাসপাতালে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে রোগিরা আসছেন চিকিৎসা সেবা নিতে।

৩০ শয্যার এই সিটি হাসপাতালে বিধি মোতাবেক নেই লোকবল। সিটি হাসপাতালের ভবনটি রাজৈর পৌরসভা থেকে ৫ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবন করেছে ৬ তলা। পৌর কর্তৃপক্ষ কয়েকবার চিঠি দিয়ে অতিরিক্ত তলা ভেঙ্গে ফেলার তাগিদ দিলেও অদৃশ্য কারণে নিরব হয়ে গেছে রাজৈর পৌর কর্তৃপক্ষ।

সিটি হাসপাতালের পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের সব কাগজ ঠিক আছে। ম্যাজিস্ট্রেট এসে আমার হাসপাতালের সব ঘুরে দেখেছে। সব ঠিক আছে। আপনারা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে জোর করে লিখিয়ে এনেছেন। আপনারা ইউএনও, ম্যাজিস্ট্রেটসহ যাদের কাছেই যান, আমাদের কিছুই করতে পারবেন না।

এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম শরীফুল ইসলাম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোন হাসপাতাল যদি তাদের কার্যক্রম চালায় তা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মোবাইল কোর্ট কাগজপত্র যাচাই করে কিভাবে সিটি হাসপাতালের বৈধতা দিল তা আমার জানা নেই।

মোবাইল কোর্টের সদস্য রাজৈর হাসপাতালের ডা. শোয়েব হোসাইন জানায়, আমাদের হাসপাতালের সকল কাগজপত্র দেখিয়েছে। সব ঠিক আছে দেখেছি। পরিবেশের কাগজও ঠিক আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠি দেখালে তিনি বলেন, এ বিষয় আমার কিছু বলার নাই।

মাদারীপুর রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামিম আক্তার জানান, শুধু সিটি হাসপাতালই না অনেক হাসপাতাল এভাবেই চলছে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি বন্ধ করতে। পারিনি, আমি হতাশ। এগুলোর ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই। বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে আমাদের জেলা অফিস ও জেলা প্রশাসন।

মোবাইল কোর্টে নেতৃত্ব দেয়া রাজৈর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রইছ আল রেজুয়ান বলেন, আমি মোবাইল কোর্টের বিচারক হিসাবে গিয়েছি। প্রতিষ্ঠান ঠিক আছে কিনা তা দেখবে এবং আমাকে জানাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। আমাদের সাথে যে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছিল তিনি বলেছেন, হাসপাতালের কাগজপত্রসহ সবকিছু ঠিক আছে। তাই আমরা চলে এসেছি। বিনা অপরাধে কাউকে তো বিচার করা যায় না। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহ্ মো. সজীব বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলে আমি রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও কে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেই। পরে ইউএনও জানায় তাদের কাগজপত্র সব ঠিক আছে তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠি ভিন্ন কথা বলছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব এখানে অন্য কোন বিষয় আছে কিনা। এছাড়া সিটি হাসপাতালে প্রয়োজনে আবার আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব।

পরিবেশ অধিদপ্তর তথ্য অধিকার আইন রাজৈর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম