শ্রীপুরে মোবাইল চুরির অপবাদ, লজ্জায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
শ্রীপুর গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গাজীপুরের শ্রীপুরে মোবাইল চুরির অপবাদে উর্মি আক্তার (১৮) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। মোবাইল চুরির অপবাদে করা শারীরিক নির্যাতন ও অপবাদ-অপমানে, লোকলজ্জায় ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি তার পরিবারের।
মঙ্গলবার (২৫মার্চ) দুপুরে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের নয়াপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত উর্মি আক্তার (১৮) ওই গ্রামের মীর হোসেনের মেয়ে। সে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী উচ্চবিদ্যালয়ের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় নিহতের মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলো ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে রাজীব প্রধান (৩৫), তার স্ত্রী আঞ্জুমানারা শিখা (৫৫), মেয়ে রেনিয়া আক্তার (৩২), মনি আক্তার (২৮) ও পুত্রবধূ মুসলিমা আক্তার (২৫)।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে উর্মি আক্তার বাড়ীর লোকদের অজান্তে ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। নিহতের মা অভিযোগ করে বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে অভিযুক্তরা আমার বাড়িতে গিয়ে ঘর তছনছ করে। মোবাইল চুরির অপবাদে আমার মেয়ে উর্মিকে মারপিট করে। চুল ধরে টানা হ্যাঁছড়া করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমরা তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাই। ঐদিন সকাল দশটার দিকে অভিযুক্তরা আমার ছেলে মুরাদকে মোবাইল চুরির অপবাদে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ তাকে একটি মামলায় আদালতে সোপর্দ করে। এক মাস হাজতবাস করে আমার ছেলে জামিনে আসে। তিনি বলেন, আমার মেয়েকে মারপিটের বিষয়ে ওই দিনই থানায় অভিযোগ করি। ঘটনার এক মাস পার হলেও পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করেনি এবং এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু অভিযুক্তরা সোমবার (২৪মার্চ) বিকেলে আমার মেয়েকে গালিগালাজ করে খুন জখমের হুমকি দেয়। অভিযুক্তদের হুমকির মুখে থানায় অভিযোগ করে বিচার না পাওয়ায় ঘৃণা লজ্জায় আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, বাদীর মেয়েকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে বাদীকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে আমাকে কোন কিছু জানায়নি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
