Logo
Logo
×

সারাদেশ

যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশে চরাঞ্চলের ত্রাস আ.লীগ নেতা ওমর গ্রেফতার

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম

যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশে চরাঞ্চলের ত্রাস আ.লীগ নেতা ওমর গ্রেফতার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলের ত্রাস ও মাদক সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ নেতা ওমর আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ওমর আলী চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চাকপাড়া গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে। তবে ওমর আলী গ্রেফতার হলেও তার অপর দুই সহযোগী উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য জুয়েল রানা পালিয়ে গেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল ‘সীমান্তবর্তী চরাঞ্চল অশান্ত, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কূটচালে সর্বস্বান্ত সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা ওমরকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে  জানা যায়, ওমর আলী আওয়ামী লীগ শাসনের বিগত ১৬ বছরে সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলের ত্রাস ও মাদককারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তিনি চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে বোমাবাজি ও ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্থ সহায়তার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরও পুলিশের ছত্রছায়ায় ওমর আলী এলাকাতে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখেন।

এদিকে ওমরের ভাই মো. আব্দুল লতিব ঢাকার শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামি। গত ৫ আগস্টের পর তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে চরবাগডাঙ্গায় আত্মগোপনে রয়েছেন। ভাই ওমরকে সঙ্গে নিয়ে লতিব এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছিলেন। সম্প্রতি চরবাগডাঙ্গায় ককটেলবাজির একাধিক ঘটনার অন্যতম আসামি ওমর আলী।

চরাঞ্চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ওমর গ্রুপের প্রকাশ্য তৎপরতা। তিনি মাদকের গডফাদার উপজেলা তাঁতী লীগ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, মাদককারবারি জুয়েল রানাসহ বেশ কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এই চক্রটি সীমন্ত পথে মাদক ও বিস্ফোরক এনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন বলে এলাকাবাসী জানান।

অন্যদিকে গত ১২ জানুয়ারি চরবাগডাঙ্গা এলাকায় মাদককারবারিদের হামলার শিকার হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স আব্দুল হাকিম পিন্টু। গত ২৩ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পিন্টুর স্ত্রী পারভিন বেগমের অভিযোগ তার স্বামী হত্যাকাণ্ডে ওমর সিন্ডিকেট জড়িত থাকলেও পরিকল্পিতভাবে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে মামলায় ফাঁসানো হয়। ওমর নুরুল জুয়েল সিন্ডিকেট পুলিশকে হাত করে এলাকার বহু নিরীহ মানুষকে পিন্টু হত্যা মামলার আসামি করা হয়। সেই থেকে চরাঞ্চলে ওমর আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, নিহত পিন্টুর স্ত্রী পারভিন বেগম বাদী হয়ে ৪ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে।

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চরবাগডাঙ্গা ইউপি সদস্য মো. জুয়েল রানাকে। অন্য আসামিরা হলেন- চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ওমর আলী, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, মতিউর রহমান, মানিক আলী, নাজমুল হক গুধা, মো. সুমন, জাহাঙ্গীর আলী, ইসমাইল হোসেন ও মোশাররফ হোসেন মুসা। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতা ওমর গ্রুপের লোক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওমরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালত সোপর্দ করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম