বিধবাকে গণধর্ষণ, মামলা করায় হত্যার হুমকি

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক বিধবা নারীকে গণধর্ষণের পর মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের পর নবীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু কাউছার আহমেদের বিরুদ্ধেও তাকে ও তার ছেলেকে খুন করে লাশ গুমের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে আবু কাউছার আহমেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন এবং এর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেছেন তিনি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা নয়াপাড়ায় বিধবা ওই নারী বাড়িতে একা থাকার সুযোগে মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়া তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীনগর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকেই মূল অভিযুক্তরা এবং নবীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু কাউছার আহমেদ তাকে ও তার ছেলেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমনকি তাদের খুন করে লাশ গুম করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। প্রাণের ভয়ে তিনি বর্তমানে ঘরছাড়া। এ হুমকির ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল রাতে তিনি আবু কাউছার আহমেদের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু কাউছার আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে খুন করে লাশ গুম করার যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এই নারীকে চিনি না, তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাঙ্গরা বাজারের তৎকালীন সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আউয়াল রবি আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তার রক্ষিতা (ভুক্তভোগী নারীকে উদ্দেশ্য করে) দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব লাগিয়ে রেখেছে।
তিনি আরও যোগ করেন, গণধর্ষণে অভিযুক্ত মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়া- এদের কারো সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিকভাবে কোনো সম্পর্ক নেই।
গণধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুসা মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত আছি, কিন্তু এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি (ভুক্তভোগী নারী) একজন খারাপ মহিলা, তার বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক খারাপ রেকর্ড আছে এলাকায়। সে আমাকে হয়রানি করার জন্যই এ অভিযোগ করেছে।
নবীনগর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, গণধর্ষণের মূল ঘটনা এবং পরবর্তী হুমকির অভিযোগ- উভয় বিষয়ই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।