Logo
Logo
×

সারাদেশ

জিলাপিকাণ্ডে প্রত্যাহার করা ওসিকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে থানা ঘেরাও

Icon

কিশোরগঞ্জ ব্যুরো

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম

জিলাপিকাণ্ডে প্রত্যাহার করা ওসিকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে থানা ঘেরাও

জিলাপিকাণ্ডে প্রত্যাহারকৃত কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেনকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে মিছিল শেষে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বুধবার দুপুরে এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি থেকে অভিযোগ করা হয়,  আওয়ামী লীগের দোসরদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে ওসিকে জিলাপি খাওয়ানোর মতো তুচ্ছ অডিও কল রেকর্ড করে  ফাঁসানো হয়েছে। তারা বলছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ করা কথিত এক সমন্বয়কের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিত ফোনালাপের অডিও ফেসবুকে ফাঁস করে জনবান্ধব ওসিকে বদলি করা হয়। তাকে দ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে।

ইটনা মধ্যবাজার থেকে বিক্ষোভ–মিছিলটি শুরু হয়। পরে থানা ঘেরাও করেন নেতাকর্মীরা। সেখানে আধঘণ্টা ঘেরাও কর্মসূচি চলে। পরে মিছিলকারীরা উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।

দুপুর ২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে সমাবেশ হয়। সেখানে বক্তব্য দেন- ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, জয়সিদ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন, ইটনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পলাশ রহমান ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজাদুর রহমান সুমন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ১২৮ বস্তা ভিজিএফের চাল উদ্ধারের ঘটনায় গত ২০ মার্চ রাতে ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিলুজ্জামান ভূঁইয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার এই  গ্রেফতার অভিযানের পর আওয়ামী লীগের দোসরেরা ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেনকে সরাতে তৎপরতা হয়ে ওঠে। এই তৎপরতার অংশ হিসেবে সমন্বয়ক দাবিদার আফজাল হোসেন শান্ত নিজে থেকে ওসি মনোয়ার হোসেনকে ফোন করে কল রেকর্ড ফাঁসের নাটক সাজান।

আফজাল হোসেন শান্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইটনা উপজেলার স্থগিত করা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। বিএনপির নেতকর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কল রেকর্ডটা আদৌ সাজানো নয়। যদি সাজানো নাটক হতো, তাহলে আমি ৫ লাখ টাকার মামলা সাজাতাম। জিলাপি খাওয়ার কাহিনী সাজাতাম না।

প্রত্যাহারকৃত ওসি মনোয়ার হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বুধবার দুপুরে একটি পোস্ট দেন। তাতে তিনি লেখেন- ‘দয়া করে কোনো বিক্ষোভ বা কোনো সমাবেশ করবেন না। যে অভিযোগে আমাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে সেই বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে আমাকে শুধু বদলি নয় বরং বরখাস্ত করলে আমি খুশি হতাম। কেননা এতে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ থাকত। যাই হোক, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ পুলিশ তথা রাষ্ট্র একদিন না একদিন এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত করবে। ততদিন পর্যন্ত আপনারা ধৈর্য ধরুন নয়তো অশুভ চক্র নতুন করে আবার আমাকে বিপদে ফেলবে। সবাই ভালো থাকুন।...আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায় হয়তো মানুষ নয়-হয়তোবা শঙ্খচিল শালিকের বেশে।’

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আফজাল হোসেন শান্ত ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের টেন্ডার পাওয়ায় মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সময় ওসি মনোয়ার হোসেন তাকে জিলাপি খাওয়ানোর কথা বলেন। আর এমন কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়ে ওঠে। এমন জিলাপিকাণ্ডে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী তাকে প্রত্যাহার করে এনে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন।

কিশোরগঞ্জ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম