মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ মর্গে রেখে পরীক্ষায় বসল শিক্ষার্থী

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
-68010380b9385.jpg)
রাজশাহীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় একদল বখাটের হামলায় নিহত হন আকরাম হোসেন (৪৫)। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বাবার লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে রেখেই পরীক্ষা দিয়েছে মেয়ে আলফি আক্তার।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর শিরোইল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। রাজশাহীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্রী আলফি।
নিহত আকরাম নগরীর তালাইমারি এলাকার বাসিন্দা। পেশায় ছিলেন বাসচালক।
অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, আলফি মেধাবী ছাত্রী। তার বাবাকে যেভাবে খুন করা হয়েছে, তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
আলফির মা মুক্তি বেগম বলেন, সারারাত মেয়েটা শুধু কেঁদেছে। কোনোভাবেই পরীক্ষা দিতে চাইছিল না। বারবার বলেছে, বাবা নেই, আমার কিছুতেই যেতে ইচ্ছা করছে না। পরে আত্মীয়-স্বজনরা বুঝিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠিয়েছেন।
মুক্তি বেগম জানান, তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিল তালাইমারির বাবর আলী রোড এলাকার আকরাম হোসেন নান্টু ও তার সহযোগীরা। বুধবার বিকালে রাস্তায় চলার সময় আলফিকে গালাগালি করে অভিযুক্তরা।
ঘটনা শুনে নান্টুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন আলফির বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হন নান্টু। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নান্টু কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে প্রথমে আলফির ভাই ইমাম হাসান অনন্তকে মারধর করে।
ছেলের চিৎকার শুনে ছুটে এলে আলফির বাবাকেও ঘিরে ধরে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। আহত অবস্থায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আকরামকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত আকরামের ছেলে ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ৪ থেকে ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন।
আসামিরা হলেন- নান্টু (২৮), বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), অমি (২৫), নাহিদ (২৫) ও শিশির (২০)।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।