স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় প্রেমিকের বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক দিয়েছেন এক নারী। এখন সেই প্রেমের টানে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন মেয়েটি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে লাপাত্তা হয়েছেন প্রেমিক মোরশেদ মিয়া।
এ অবস্থায় গত চার দিন দিন ধরে মোরশেদের বাড়িতে অনশন অব্যাহত রেখেছেন সেই নারী। এ নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি উভয়পক্ষের কাছে বাণিজ্য করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বৈষ্ণবদাস গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বিয়ের দাবিতে ওই নারীর অনশনের দৃশ্য। সেখানে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ বছর আগে বৈষ্ণবদাস গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মোরশেদ মিয়ার সঙ্গে লেখাপড়ার সুবাদে একই গ্রামের ওই মেয়ের গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে ৪ বছর আগে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে দেন তার পরিবার। সেখানে একটি ছেলের মা হন তিনি; কিন্তু এখন পর্যন্ত এই মেয়ের অপেক্ষায় মোরশেদ মিয়া অবিবাহিত আছেন। কখনো থামেনি তাদের সেই প্রেমের সম্পর্ক।
এরই ধারাবাহিকতায় সাত মাস আগে মোরশেদের বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক দেন ওই নারী। এরপর বিয়ে করবে বলে গত ১৩ এপ্রিল সকালের দিকে মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে আনে মোরশেদ। এতেই ঘটে নানা বিপত্তি।
এদিকে পরিবার আর কতিপয় স্বার্থান্বেষী লোকের অসহযোগিতায় মোরশেদ লাপাত্তা হয়েছে। তবু অনশন ছাড়েননি ওই নারী। চার দিন ধরে বিয়ের দাবিতে মোরশেদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এ ঘটনা ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওই নারীকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করছেন শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ। তবে রহস্যজনক কারণে এ ঘটনার কোনো সমাধান হচ্ছে না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মোরশেদের সঙ্গে প্রেম আছে বলেই মেয়েটি বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। আমরা চাই ওই মেয়ের সঙ্গে মোরশেদের বিয়ে হোক; কিন্তু রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম উভয়পক্ষের কাছে টাকা নিয়ে বিয়ে পড়ানোয় টালবাহনা করছেন। ইতোমধ্যে এ ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, মোরশেদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেম। ওর কথা মতো আমার স্বামীকে তালাক দিয়েছি, আর বিয়ে করার জন্য আমাকে ওর বাড়িতে ডেকে এনে পালিয়েছে সে। এখন আমি কই যাব? বিয়ে না করা পর্যন্ত এই বাড়ি ছাড়ছি না। তা না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ওই নারীর মা বলেছেন, আমার মেয়ের বিয়ে পড়ানোর জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হলে সেই বিয়ে এখনো পড়াননি চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে প্রেমিক মোরশেদের মা বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। এ নিয়ে গ্রামবাসীর কাছে বিচার দাবি করছি।
সাদুল্লাপুরের রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ছেলে প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়ায় বিয়ে পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করিনি।
