মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক ৭ বাংলাদেশি জেলে এখন কোথায়
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভারতে মাছ ধরতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফের হাতে ৬ মাস আগে আটক হন কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ৭ জেলে। তারা এখন কোথায় কিভাবে আছেন- তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ওই সব জেলে পরিবারের সদস্যরা।
রাজিবপুর উপজেলাধীন জিঞ্জিরাম নদী হয়ে নদী পথে ভারতের ভেতরে মাছ ধরতে গিয়ে গত বছরের ৪ নভেম্বর বিএসএফের হাতে আটক হন তারা। দীর্ঘদিন বাড়ি না ফেরায় উৎকণ্ঠায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তাদের পরিবার। দীর্ঘদিন তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি এক গোপন মাধ্যমে জানা গেছে- ওই ৭ জেলে ভারতের আমপাতি থানায় আটক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা মিলে মোট ৭ জন জেলে গত বছরের ৩ নভেম্বর তারিখে রাজিবপুর উপজেলার জিঞ্জিরাম নদী হয়ে নদী পথে ভারতে অংশে প্রবেশ করে। এ সময় অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাদের আটক করে হাজতে দেয়। দীর্ঘদিন তাদের খোঁজ না থাকায় ওই ৭ জেলের পরিবার পরিজন দিন-রাত উৎকণ্ঠা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে।
সম্প্রতি ভারতের আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জ থানার তুরা মেঘালয় এলাকার এক বাসিন্দার মাধ্যমে হাজতি এক জেলে গোপনে পরিবারের কাছে চিঠি লেখে। মীর জাহান আলী নামে ওই জেলের পাঠানো চিঠির মাধ্যমে পরিবারের কাছে বন্দি জেলেদের সন্ধান মেলে।
আটক জেলেরা হলেন- চিলমারী উপজেলার হরিনেরবন্দ এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), রমনা ব্যাপারীপাড়া এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫),শামছুল হকের ছেলে মীর জাহান আলী (৪৫), মৃত এছাহক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), পকের আলীর ছেলে আমির আলী (৩৫), রাজিবপুর উপজেলাধীন বালিয়ামারী ব্যাপারীপাড়ার জরিপ উদ্দিনের ছেলে আঙ্গুর হোসেন (২০) ও রৌমারী উপজেলাধীন যাদুরচর বকবান্ধা এলাকার ছলিম উদ্দিনের ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।
এদিকে গোপনে স্ত্রীকে পাঠানো মীর জাহান আলীর চিঠির মাধ্যমে জানা যায়, বর্তমানে তারা মেঘালয়ের কালাইর চর পেট্রল থানা আমপাতিতে রয়েছেন। চলতি মাসে তাদের হাজত থেকে ছাড়িয়ে নিতে না পারলে তাদের স্থায়ী সাজা দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই ৭ জনের সন্ধান পাওয়ার পর চেয়ারম্যান, ইউএনও ও ডিসির কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। জেলেদের হাজত থেকে ছাড়িয়ে আনতে তারা আশ্বাস দিয়েছেন। অতি দ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে আটক জেলেদের পরিবার আকুতি জানায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রুকুনুজ্জামান স্বপন বলেন, হাজতে আটক ব্যক্তিরা সবাই পেশায় জেলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বৈধভাবে ভারতে গিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা বৈধভাবে যেতে না পারায় অবৈধভাবে মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক হন।
রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা বলেন, ভারতীয় হাজতে আটক জেলেরা রাজিবপুর উপজেলার জিঞ্জিরাম নদীর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক হয়েছেন। আমরা ভুক্তভোগীদের যাবতীয় সহযোগিতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। জেলেদের হাজত থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
