Logo
Logo
×

সারাদেশ

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শ্রমিকের আত্মহত্যা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, গাজীপুর

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শ্রমিকের আত্মহত্যা

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় কারখানার এক শ্রমিক কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই ঘটনার পর থেকে কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ইদ্রিস আলী নামের ওই শ্রমিক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষাক্ত কেমিক্যাল খান। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি শুক্রবার দুপুরের পর জানাজানি হয়।

মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী (২৩) নীলফামারী এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি ওই কারখানার কার্টন সেকশনে কাজ করতেন।

মৃত্যুর আগে ওই শ্রমিক কারখানা কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সেখানে তিনি লেখেন, ‘মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস লিমিটেড এখানে এক বছর যাবত চাকরি করি। কিছু লোক আসার তিন মাস এবং ছয় মাস হচ্ছে তাদের পার্মানেন্ট করে। আমাকে করে না। কারণ হচ্ছে আমরা মেশিনের লোক। একদিন ৬টায় গিয়েছিলাম তার জন্য আমার বিচার করছে, আমি কী অপরাধ করছি। তাদের জন্য আমার জীবন আমি শেষ করে দেব। এর জন্য দায়ী আমাদের সেকশনের প্ল্যানিং কামরুল স্যার আর হচ্ছে ম্যানেজার হারুন স্যার। ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব। ঈদের নিয়মে আমি অনেক কষ্ট পাইছি; এই পৃথিবীর মানুষ বড়ই নিষ্ঠুর আপনারা এর বিচার করবেন।’

কারখানা শ্রমিকরা জানান, মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী এক বছর হলো ডেইলি মজুরিতে কাজ করতেন। অনেককে পার্মানেন্ট করা হলেও তাকে করা হয়নি। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ বকাঝকা করেছেন। পরে তিনি কেমিক্যাল খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। প্রথমে তাকে সফিপুর তানহা হাসপাতালে নেওয়া হলে তারা ভর্তি করেনি। গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যায়।

তারা আরও জানান, হারুন ও কামরুল ম্যানেজমেন্টে যোগ দেওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার করছে। তারা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। কথায় কথায় চাকরি থেকে ছাঁটাই করে। তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। না হলে আরও শ্রমিক মারা যাবে।

মৃত শ্রমিকের স্ত্রী হাসি আক্তার বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন, এখন তাকে নিয়ে সদর হাসপাতালে রয়েছি। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।

মৃতের ভগিনীপতি বাবু বলেন, সে অনেকদিন হলো কাজ করে। ওর সঙ্গের সবাইরে চাকরিতে পার্মানেন্ট করলেও কর্তৃপক্ষ ওকে পার্মানেন্ট করেনি। অসুস্থ থাকার কারণে ৬টায় কারখানা হতে বের হয়। এজন্য পরের দিন ম্যানেজমেন্ট হারুন ও কামরুল তাকে রুমে বকাঝকা করে। পরে দুঃখে আত্মহত্যা করেছে।

তানহা হাসপাতালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা বলেন, রাত ১২টার দিকে কয়েকজন লোক এক রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তিনি কিছু একটা খেয়েছিলেন হয়তো। মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছিল, পরে তাকে আর ভর্তি করিনি।

মন্ট্রিমস কারখানার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন শ্রমিক মারা গেছেন। আমরা একটু ব্যস্ত আছি, বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলব।

গাজীপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম