বিবাহিত জীবন সুখের এবং মধুর হয়— এমন ধারণা নিয়ে ১৭ মাস আগে সংসার জীবন শুরু করেছিলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর শহরের সুজালপুর গ্রামের স্লুইসগেট এলাকার সোহাগ ইসলাম (২১) নামে এক যুবক। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই রঙিন স্বপ্ন ফ্যাকাসে হতে শুরু করে।

কারণে অকারণে দাম্পত্যের জীবনে কলহ শুরু হয়। চলমান কলহ চরম আকার ধারণ করে আইন আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরিশেষে রোববার দুই পরিবারের সমঝোতায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে সংসার জীবনের অবসান ঘটে এবং দাম্পত্য কলহ থেকে মুক্তি লাভ করে সোহাগ ইসলাম।

রোববার বিবাহবিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নিজেকে মুক্তবিহঙ্গ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বাড়িতে ফিরে ১০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন।

সোহাগ ইসলামের বাবা মো. আব্দুর রহিম জানান, তার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলেমেয়ের মধ্যে মেয়ে বড় এবং বিবাহিতা। ছেলে সোহাগ ইসলাম পৌর শহরের কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ১৭ মাস পূর্বে পৌর শহরের মাকড়াই গ্রামের শেখ শাহাদাতের মেয়ে শাহিনুর আক্তারের (১৯) সঙ্গে পরিবারের সম্মতিক্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়; কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মেয়ে এবং তার পরিবারের আচরণগত কারণে পরিবারে অশান্তি বিরাজ করে। এটি নিয়ে অনেক বিচার সালিশ হওয়ার পরও কোনো সমাধান হয়নি। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্তে রোববার কাজি অফিসে গিয়ে ছেলেমেয়ে উভয়ে উভয়কে তালাক দিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।

কেন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন? জানতে চাইলে সোহাগ ইসলাম বলেন, পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে করেছিলাম। এখন পর্যন্ত কোনো সন্তান না হলেও বিয়ের পর বেশ কিছুদিন সুখেই কাটছিল; কিন্তু কিছু দিন গড়াতে স্ত্রী ও তার পরিবারের আচরণ সংসারে অশান্তি শুরু হয়। অনেক চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি। পরিস্থিতি সহ্যের সীমা অতিক্রম করায় কঠিন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি। অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে এই মুহূর্তে আর বিয়ে করবেন না বলে জানান তিনি।

এদিকে বিবাহবিচ্ছেদের পর দুধ দিয়ে গোসলের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।