ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে ফরিদপুরের একতারা-দোতারা
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তৈরি একতারা-দোতারা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতসহ অন্য দেশেও যাচ্ছে। স্থানীয় হেলাল সাধু নামে এক ব্যক্তি তার নিজের কারখানায় এসব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করছেন বিগত ৭ বছর যাবত। তিনি একতারা-দোতারার পাশাপাশি অন্য বাদ্যযন্ত্রও তৈরি করেন।
চারজন কর্মচারী নিয়ে তার কারখানায় তৈরি এসব একতারা-দোতারা দেশে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেলাল সাধু উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ডহরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গত প্রায় সাত বছর ধরে রুপাপাত ইউনিয়নের কালীবাড়ি এলাকায় অবস্থিত তার কারখানায় এসব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছেন। রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাগুরা, গোপালগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পাইকারি বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া আশপাশের মেলায় বিক্রির জন্য কম দামের একতারা ও দোতারা বানিয়ে থাকেন।
এখন তার কারখানার তৈরি বাদ্যযন্ত্র দেশ পেরিয়ে ভারতসহ অন্য দেশেও যাচ্ছে। অনেকে আগ্রহ করে তার কারখানায় কিনতে আসেন এসব বাদ্যযন্ত্র।
হেলাল সাধু বলেন, গত প্রায় ৭ বছর ধরে এসব যন্ত্র তৈরি করছি। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। আশপাশের ছোট-বড় মেলায় আমার তৈরি এসব বাদ্যযন্ত্র বিক্রি হয়। ভারতেও পাঠানো হয় এসব বাদ্যযন্ত্র। অনেকে নিজেরা কিনে নিয়ে যান এখান থেকে। আমার এ কারখানায় নিয়মিত চারজন শ্রমিক কাজ করেন। দিনরাত এসব যন্ত্র তৈরিতে কাজ চলে। প্রকারভেদে একতারা ৫শ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি দোতারা, সরোস, সরোদ ৪ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
বোয়ালমারী উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ লোকসংগীত, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি গান গাইতো। এসব গানের মূল বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হতো একতারা-দোতারা। বাড়ির উঠানে রাতে লোকজন জড়ো হয়ে একতারা-দোতারা বাজিয়ে এসব গান গাইতো। এখন যেন তা বিলুপ্তির পথে। যে কারণে একতারা-দোতারার কদর বেশ কমেছে।
রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, হেলাল সাধু একতারা-দোতারা তৈরি করে একদিকে জীবিকা নির্বাহ করছেন, অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে এ বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার টিকিয়ে রেখেছেন। তিনি এলাকার সুনাম ছড়াচ্ছেন। তার এ কারখানা চালানোর জন্য আমাদের উৎসাহ দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল হাসান মিলন বলেন, যারা বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন, তাদের অনেকে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারদর্শী হয়ে থাকেন। তারা যদি কোনো সহযোগিতার জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে আবেদন করেন; তাহলে তারা সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। এছাড়া বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে কারিগরদের আমরা অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকি।

