Logo
Logo
×

সারাদেশ

গ্রিস প্রবাসীর স্ত্রীর কাণ্ড

Icon

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম

গ্রিস প্রবাসীর স্ত্রীর কাণ্ড

মাদারীপুরে পরকীয়া প্রেমের টানে গ্রিস প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে উল্টো তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন স্ত্রী (২৩)। এমন অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী গ্রিস প্রবাসী নুর আলম মুন্সির (৩৮) পরিবার।

পুলিশ বলছে, দুই পক্ষই পালটাপালটি অভিযোগ দিয়েছে, আমরা তদন্ত করছি।

প্রবাসী নুর আলম মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের আপাসী গ্রামের করম আলী মুন্সীর ছেলে।

গ্রিস প্রবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ বছর যাবত গ্রিসে বসবাস করছেন প্রবাসী নূর আলম মুন্সী (৩৮)। বিগত ৫ বছর পূর্বে গ্রিস থেকে ছুটিতে এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের কয়েক মাস পর পরিবারের কথা ভেবে আবারও প্রবাসে চলে যান। এরপর কয়েক বছর ভালোই চলছিল তাদের সংসার।

দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার সুযোগে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন নুর আলমের স্ত্রী। বিষয়টি নুর আলম জানতে পেরে তাকে সতর্ক করেন; কিন্তু স্ত্রী তার কথায় কোনো কর্ণপাত না করে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে ঘোরাফেরা করেন। এমনকি বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকায় তার পরকীয়া প্রেমিককে সহযোগিতা করেন। 

সর্বশেষ ৩ মাস আগে স্বামীর বসতবাড়ি থেকে কয়েক লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ বিদেশ থেকে পাঠানো ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন মালামাল নিয়ে পিতার বাড়িতে চলে যান প্রবাসীর স্ত্রী। এছাড়াও নুর আলম বিদেশ থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৯ লাখ টাকা পাঠান। সেই টাকারও কোনো হদিস নেই। স্ত্রী বাবার বাড়ি যাওয়ার পরে নুর আলমের পরিবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে মাদারীপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী প্রবাসীর বোন ফাহিমা আক্তার। ফাহিমাসহ ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন প্রবাসীর স্ত্রীও।

প্রবাসী নুর আলমের বোন ফাহিমা আক্তার জানান, আমার ভাইয়ের বিয়ের পরে কয়েক বছর তাদের সংসার সুখেশান্তিতে ছিল। তবে আমার ভাই বেশির ভাগ সময় তার স্ত্রীকে নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি থাকতেন। তাদের সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে; কিন্তু আমার ভাই বিদেশে যাওয়ার পরে আমার ভাইয়ের স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছি; কিন্তু সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা জানতে পেরেছি আমার ভাইয়ের সংসার থেকে টাকা-পয়সা স্বর্ণালংকার নিয়ে গিয়ে আমার ভাইকে গোপনে তালাক দিয়েছেন এবং পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করছেন। এরপরই আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

নুর আলমের বোনজামাই জাকির সিকদার বলেন, আমি একটি চাকরি করি; যার কারণে নিজের বাড়িতে ঠিকমতো আসতে পারি না। সেখানে মিথ্যা অভিযোগপত্রে আমার স্ত্রী ও আমার নাম দিয়ে দিয়েছে। 

প্রবাসী নুর আলম বলেন, বিয়ে হওয়ার পরে আমার স্ত্রী বেশির ভাগ সময় আমার শ্বশুরবাড়ি থাকত। যে কারণে আমিও সেই বাড়িতে বেশির ভাগ সময় থাকতাম। এমনকি সেই বাড়িতে থাকা অবস্থায় বেশির ভাগ খরচ আমি নিজে করতাম আমার সন্তান ও সংসারের সুখের কথা ভেবে; কিন্তু আমি প্রবাসে আসার পরে আমার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়ায়। বিষয়টি অনেকবার সমাধানের চেষ্টাও করেছি; কিন্তু সে আমার সব টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার ও মালামাল নিয়ে গিয়ে আমাকে তালাক দিয়েছে। এমনকি আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় আমাকেসহ আমার পরিবারের নামে মিথ্যা একটা অভিযোগ দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

প্রবাসীর স্ত্রীর বাবা ও মা অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমাদের একমাত্র মেয়েকে নুর আলমের কাছে বিয়ে দিয়ে ভুল করেছি। সে সন্তান ও স্ত্রীর কোনো খরচই দিত না। এজন্য আমার মেয়ে স্বামীকে তালাক দিয়েছে। মেয়ে কারো সঙ্গে কোনো প্রেম করে না। আর যদি করত তাহলে সে এতদিন তার সঙ্গেই চলে যেত। অথচ আমার মেয়ে আর কোনো দিন বিয়েই করবে না বলে জানিয়েছে। আমার মেয়ে বর্তমানে মাদারীপুর কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে।

এ সময় টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে একপর্যায়ে মাত্র ১ লাখ টাকা ধার নেওয়ার কথা স্বীকার করেন তারা।

প্রবাসীর স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন জানান, দুইপক্ষই অভিযোগ করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদারীপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম