মুন্সীগঞ্জে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা, গণপিটুনি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ০২:২৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় সানা মাঝি (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মাকুহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সানা মাঝি মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মাকুহাটি গ্রামের মৃত মোহাম্মাদ মাঝির
ছেলে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পূর্ববিরোধের জেরে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা
হয়েছে। পরে তাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে গণপিটুনি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ডাকাতির সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে একনলা
বন্দুকসহ আটক করা হয়েছে রাত ১১টা ২০মিনিটের দিকে এমন সংবাদ পাই। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে
দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছে। সেখানে থেকে একটি একনালা শর্টগান
ও দুটি কার্তুজ জব্দ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে
সানা মাঝি তার পরিবার নিয়ে পার্শ্ববর্তী বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ডেকরাপাড়া গ্রামে ভাড়া
বাসায় থাকতেন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে সানা মাঝিকে পূর্ব পরিচিত স্বাধীন ডেকে নিয়ে
যায়। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
একইদিন রাত ৯টার দিকে মাকুহাটি গ্রামের বাবু মাঝির বাড়িতে ডাকাতি করতে
গেছে সন্দেহ করে স্থানীয় লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। পরে তারা সানা মাঝিকে আটক
করে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার মুন্সীগঞ্জ জেনারেল
হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানা মাঝিকে মৃত ঘোষণা করে।
সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সানা মাঝির
পরিবারের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই বাবু মাঝিদের বিরোধ শুরু হয়। ২০০১ সালে বাবু মাঝির ভাই
শিপন মাঝির গুলিতে নিহত হন সানার বাবা মোহাম্মদ মাঝি। এরপরের বছর শিপনকে হত্যা মামলায়
সানা ও তার চার ভাই দীর্ঘদিন জেল খাটেন। ২০১৬ সালে তারা কারামুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরেন।
পরে দুপক্ষ মীমাংসা করলেও বাবু পক্ষের মধ্যে ক্ষোভ রয়ে যায়।
সানা মাঝির স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘বাবু মাজি ও তার ভাই স্বাধীন মাঝির
অত্যাচারে আমরা গ্রাম ছাড়ি। তারপরও তারা আমাদের পিছু ছাড়েনি। পূর্ব বিরোধের জেরে তারা
আমার স্বামী ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। হত্যার পর তাকে ডাকাত বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও
করছে।’
