দশানী নদীর বাঁধ কাটতে বাধা
বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ০২:৫৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে বাঁধ কাটতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। বাঁধ কাটতে বাধা দেওয়ায় দুজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট
আসমা উল হুসনা এ দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার চর আইরমারী গ্রামের সোনার উদ্দিনের ছেলে
রহমত আলী (৪০) ও একই গ্রামের আলীর ছেলে ইউসুফ আলী (৩২)।
এদিকে, বাঁধ অপসারণের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া
পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের একটি শাখা দশানী নদী। দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ
উপজেলার সীমান্ত চরাঞ্চল মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নদীটি। দশানী নদীর একটি খরস্রোতা
শাখা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন দিয়ে বহ্মপুত্রে মিলিত হয়েছে। আরেকটি অংশ বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুপাড়ার ও মেরুরচর
ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলেছে।
সম্প্রতি দশানী নদীর ভাঙন রোধে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নরে খাপড়াপাড়া গ্রামে
নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে প্রায় ১২০ মিটার লম্বা ও ৩৫ মিটার প্রস্থ বাঁধ নির্মাণ করা
হয়। এ বাঁধ দেখে আধা কিলোমিটার দূরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী গ্রামে প্রায় ১৫০
মিটার লম্বা ও ৫০ মিটার প্রস্থ বাঁধ নির্মাণ করে চর আইরমারী গ্রামের মানুষেরা। ফলে
২০ গ্রামের আধাপাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দুই গ্রামবাসীর সঙ্গে বাঁধ
অপসারণ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে বাধঁ দুটি কেটে নদীর প্রবাহ সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চর আইরমারী গ্রামে বাঁধ কাটতে যান বকশীগঞ্জ ইউএনও মাসুদ রানা।
এ সময় চর আইরমারী গ্রামের বাসিন্দারা বাঁধ কাটতে বাধা দেয়।
একপর্যায়ে প্রশাসনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসী। পরে চর
আইরমারী গ্রামবাসীর সঙ্গে শেখপাড়া গ্রামবাসীর সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। সেনাবাহিনী
ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বাধঁ কাটতে বাধা দেওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে
রহমত আলী ও ইউসুফ আলীকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের কারাদণ্ড দেওয়া
হয়।
সরেজমিনে গিয়ে উভয় গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসঙ্গে দুই
বাঁধ কাটা হলে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
বকশীগঞ্জ ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, ‘বাঁধ অপসারণ করতে গেলে গ্রামবাসী বাধা
দেয়। এতে করে বাঁধ অপসারণ করা যায়নি। তবে বাধা দেওয়ায় দুজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে
কারাদণ্ড দেওয়া হয়।’
