Logo
Logo
×

সারাদেশ

পচে নষ্ট হচ্ছে কষ্টের ফসল বাঙ্গি

Icon

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ০৯:১৫ পিএম

পচে নষ্ট হচ্ছে কষ্টের ফসল বাঙ্গি

নাটোরের গুরুদাসপুরে দশ বছর ধরে বাঙ্গির চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রসুনের সাথি ফসল হিসেবে অনেকটা বিনা খরচে বাঙ্গির চাষ লাভজনক হওয়ায় এদিকে ঝুঁকেছেন চাষিরা; কিন্তু এ বছর চাহিদা ও উপযুক্ত মূল্য না থাকায় খরচ উঠছে না। ফলে মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে কষ্টের ফসল বাঙ্গি। বাঙ্গি জমি থেকে নিয়ে এলেও বিক্রি না হওয়ায় বাড়ির পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। পরে তা পচে নষ্ট হচ্ছে। 

চাষিরা জানান, বিগত সময় বাঙ্গি চাষ লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ নিয়ে বাঙ্গির আবাদ করেছেন তারা; কিন্তু হঠাৎ এ বছর ক্রেতা কম ও দরপতনে উৎপাদিত বাঙ্গি নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিক মজুরি ও পরিবহণ ব্যয় না পেয়ে রসালো এ সুমিষ্ট ফল সংগ্রহে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে অধিকাংশ বাঙ্গি। এমন হলে আগামীতে এ অঞ্চলের চাষিরা এ ফসল চাষে আগ্রহ হারাবেন।

উপজেলার পোয়ালশুড়া দড়িপাড়ার কৃষক আব্দুল ওয়াহাব জানান, তিনি এ বছর দুই বিঘা জমিতে বাঙ্গির আবাদ করেছেন। সমপরিমাণ জমিতে গেল বছর ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এ বছর বিক্রি করেছেন মাত্র ১৮ হাজার টাকা। বাজারে ক্রেতা না মেলায় অনেক সময় বাঙ্গির স্তূপ ফেলেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

পোয়ালশুড়ার সানোয়ার হোসেন, নয়াবাজারের আনারুল, নারিবাড়ীর মকবু্ল, গেদা, বারেক, আবুলসহ, চলনালী, বিন্যাবাড়ীর অন্তত ১৫ জন কৃষক জানান, তারা অধিকাংশ বর্গাচাষি। জমির লিজ মূল্য, চাষ, বিজ, সার, কিটনাশক, পানিসেচ, শ্রমিকের মজুরি মিলিয়ে প্রতি বিঘা রসুন চাষে খরচ লক্ষাধিক টাকা। রসুনের সাথি ফসল বাঙ্গি চাষে খরচের প্রায় অর্ধেক টাকা উঠে আসতো। কিন্তু এ বছর দাম না থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা ও সুদমুক্ত কৃষি ঋণের দাবি জানান তারা।

স্থানীয় আড়তদার শাহীন আলী বলেন, প্রতিদিন গুরুদাসপুর থেকে ৮-১০ ট্রাক বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি বিক্রি হয়। গেল বছর প্রতিটি বাঙ্গির পাইকারি দাম ছিল ৩২ টাকা। কিন্তু এ বছর চাহিদা না থাকায় সেই বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৮ টাকায়। ক্রেতা চাহিদা না থাকায় কমদামে কিনেও বিক্রি হচ্ছে না। এতে পচে নষ্ট হচ্ছে বাঙ্গি, পুঁজি হারাচ্ছেন পাইকাররাও।

কুমিল্লা থেকে আসা আব্দুল খালেক বেপারি জানান, এবার বাঙ্গীর চাহিদা কম। বিক্রি করতে না পারায় কেনা যাচ্ছে না। প্রতিবছর প্রচুর বিক্রি হতো। প্রতিদিন ৬-৮ গাড়ি কিনতাম, এবার ২-১ গাড়িতেই শেষ করতে হচ্ছে। 

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, গুরুদাসপুরে সুমিষ্ট রসালো বাঙ্গির খ্যাতি দেশজুড়ে। এ বছর ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক মাঠ পরিদর্শন ও পরামর্শে চাষি বাঙ্গির ভালো ফলন পেয়েছেন।

বাঙ্গি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম