মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে শিশুকে দেড়লাখ টাকায় বিক্রি করলেন বাবা
নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম
শিশুকন্যা, মা পপি, বাবা কাইয়ুম, ছবি- যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নগরকান্দায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে শিশুকন্যাকে (৮ মাস) ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে কাইয়ুম বিশ্বাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম।
মঙ্গলবার (৬ মে) নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মাদ সফর আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সম্প্রতি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২৮ এপ্রিল নগরকান্দা থানা পুলিশকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, ৩ বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপির সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর থেকে তাদের পরিবারে কলহ লেগেই থাকত। এরই মধ্যে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। পরে ৫ মাস আগে কলহের জেরে তাদের তালাক হয়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান, তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে কোল থেকে কেড়ে রেখে দেন স্বামী। পরে তার স্বামী ওই শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
তিনি বলেন, আমার বাচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারি না। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে মেয়েকে বিক্রি করা হয়েছে তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই। ওরা বলছে- আমরা দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি, যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও।
এ বিষয়ে কাইয়ুমের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে অন্য একজন রিসিভ করে ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
এদিকে শিশুটির বাবা কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
নগরকান্দা থানার ওসি জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন, সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা অথবা বাবার কাছে ওই শিশুটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
