Logo
Logo
×

সারাদেশ

শিরকের অভিযোগ এনে কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ

Icon

টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম

শিরকের অভিযোগ এনে কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ

পাপ ও শিরকের অভিযোগ এনে কালের সাক্ষী ও শত বছর বয়সি একটি বটগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মাদারীপুরের স্থানীয় আলেম সমাজ ও জনতার বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, গাছটির গোড়ার দিকের কিছু অংশ এখনও কাটা অবশিষ্ট আছে। তবে ইতোমধ্যে বেশির ভাগ কেটে ফেলা হয়েছে। সোমবার মাদারীপুর সদর উপজেলা শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরার কান্দি গ্রামে গাছটি কাটা হয়। 

মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলম মীরার কান্দি গ্রামের কুমার নদের পাশে স্থানীয় সাত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন একটি বাগানের মধ্যে কালের সাক্ষী শত বছরের একটি বটগাছ ছিল। গত কয়েক বছর ধরে গাছটিকে ঘিরে স্থানীয়রা নানা কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন। স্থানীয় মুসলাম ও হিন্দু উভয় ধর্মের কিছু মানুষ মনের বাসনা পূরণ, রোগ বালাই থেকে মুক্তিসহ নানা বিষয় নিয়ে মানত করতেন। গাছের গোড়ায় মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালাতেন। পাশাপাশি নতুন গামছা, কাপড়, মিষ্টিসহ নানা জিনিসপত্র রেখে যেতেন। 

সম্প্রতি পহেলা বৈশাখকে ঘিরে ওই বটগাছের নিচে মেলা ও বাউল গানের আয়োজন করেন স্থানীয়রা। ফলে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় আলেম সমাজের। তাদের বাধায় বৈশাখের আয়োজন স্থগিত করা হয়। তবে মানতের বিষয়টি চলতে থাকে।

পরে স্থানীয় আলেম সমাজ ও জনতা মিলে সোমবার সকালে গাছ কাটা শুরু করেন। সারাদিন তারা গাছটি কাটেন। ইতোমধ্যে গাছটির প্রায় সব অংশই কেটে ফেলা হয়েছে। এখন বটগাছটির গোড়ার সামান্য অংশ কাটা বাকি আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শারমিন বেগম বলেন, আমি বিয়ের পর প্রায় ৩০ বছর ধরে গাছটি দেখে আসছি; কিন্তু সামান্য অজুহাত দিয়ে গাছটি কেটে ফেলা ঠিক হয়নি। এই গাছ কাটা বন্ধ করার জন্য অন্য ব্যবস্থা নিতে পারত। 

স্থানীয় মো. মাহবুব হোসেন বলেন, গাছ আমাদের অনেক উপকারে আসে। নদী পার হয়ে এখানে বটের ছায়ায় অনেক মানুষ বিশ্রাম নিতো। পাপ ও শিরকের অজুহাত দিয়ে গাছটি কাটা ঠিক হয়নি। তবে এগুলো বন্ধের জন্য অন্য ব্যবস্থা নিতে পারতেন।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি নন স্থানীয় আলেম সমাজ। তাই তাদের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিব আহম্মেদ চৌধুরী জানান, বটগাছের গোড়ায় এমন কর্মকাণ্ড ইসলাম সমর্থন করে না। তাই কেটে ফেলা হয়েছে এই গাছটি।

মাদারীপুর বন বিভাগের জেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি আমরা জানি। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেন, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টেকেরহাট শিরক বটগাছ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম