ঘুসের টাকা গুনে নেওয়া সেই ভূমি কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার
রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঘুসের টাকা গুনে নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়া কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মণ্ডলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে রৌমারী থেকে প্রত্যাহার করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার হালদার।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মণ্ডলের ঘুস লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ভুক্তভোগী ও কর্মকর্তার কথোপকথন এবং ১১ হাজার টাকা গুনে নেওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার পরিষদের একটি বিশ্রাম কক্ষে বিছানার ওপরে বসে সিগারেট খাচ্ছেন। এ সময় হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে জমির কাগজপত্র দেখেন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মণ্ডল। কথোপকথনের একপর্যায় তাকে ৫শ টাকার নোট গুনে মোট ১১ হাজার টাকা দেন এক ব্যক্তি।
এ সময় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মণ্ডল টাকা গুনে নেওয়ার সময় বলেন, বেশি করে দেন। বড় স্যারের কাছে গেছেন যহন। কাল না কলেন ১৫ দিমু।
টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, কো, আপনি শুনতে ভুল করেছেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সূত্র ধরে বন্দবেড় ইউনিয়নের চর বন্দবেড় গ্রামের আব্দুল্লাহেল কাফী ঘুসের টাকা লেনদেনের ভিডিওর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ৩ একর সাড়ে ৪ শতক জমির খাজনা দিতে বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। সেখানে ভূমি কর্মকর্তা আমার কাছে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১ লাখ ১২ হাজার টাকা খাজনার হিসাব দেন। এ সময় আমি বলি- ২০২৪ সাল পর্যন্ত খাজনা দেওয়া আছে। এতো টাকা কিভাবে হয়? পরে ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মণ্ডল আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকায় নিষ্পত্তি করে দিতে চান। পরে দরকষাকষি করে ৭১ হাজার টাকায় রফাদফা হয়। গত মাসে আমি তাকে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। গত সপ্তাহে বাকি ১১ হাজার টাকা তার খাস কামরায় দিয়েছি। এ সময় কে বা কারা ভিডিও করেছে আমি জানি না। তবে ভূমি কর্মকর্তার কাছে যখন খাজনার দাখিলা নেই- সেখানে দেখতে পাই ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মাত্র এক হাজার ৫০৫ টাকা পরিশোধ দেখিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি কোথাও অভিযোগ করেননি বলেও নিশ্চিত করেন।
প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল ছালাম মণ্ডল বলেন, আমি প্রত্যাহারের চিঠি পেয়েছি।
প্রত্যাহার বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, অভিযুক্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে রৌমারী থেকে প্রত্যাহার করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তার শাস্তির বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, জেলা প্রশাসক স্যার ভালো জানেন।
