জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

মীরসরাই উপজেলা সদরে অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের ১১টি পদের মধ্যে ছয়টিই শূন্য। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। বাধ্য হয়ে বেসরকারি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে খামারিদের।
জানা গেছে, ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা নিয়ে
গঠিত মীরসরাই উপজেলা। এখানে মোট খামার রয়েছে এক হাজার ৯১২টি। এগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক
দুগ্ধ খামার ১২০টি, পারিবারিক দুগ্ধ খামার এক হাজার ১৩৯টি, ছাগলের খামার ২৭টি, ভেড়ার
খামার ছয়টি, লেয়ার মুরগির খামার ৩২টি, ব্রয়লার মুরগির খামার ৫১৭টি, হাঁসের খামার ১৭টি,
হ্যাচারি চারটি, ব্রিডার ফার্ম ছয়টি, ফিড মিল তিনটি, ব্রয়লার কন্ট্রোল সেড ৯টি ও ৩২টি
সোনালি মুরগির খামার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৫৫টি রেজিস্টারকৃত।
উপজেলার এসব খামারে গরু রয়েছে দুই লাখ
৩৬ হাজার ৪২৯টি, মহিষ রয়েছে চার হাজার ৭২৫টি, ছাগল রয়েছে ২৯ হাজার ৪৫০টি, ভেড়া রয়েছে
দুই হাজার ৪৭৫টি, হরিণ রয়েছে ৫২২টি, ঘোড়া আটটি, শুকর ৫৪৬টি, মুরড়ি রয়েছে ৯ লাখ ৮৫ হাজার
৯৭৫টি, হাঁস রয়েছে ৫৭ হাজার ১০টি ও কবুতর রয়েছে ১২ হাজার ৩২৩টি।
প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে
১১ জন বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ থাকলেও শূন্য রয়েছে ৬টি।
ফলে খামার মালিকরা বিভিন্ন গবাদি পশুর চিকিৎসা ও অপারেশনে ছুটছে বেসরকারি চিকিৎসকের
কাছে। এতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী
গ্রামের মানস কান্তি ভৌমিক বলেন, ‘আমার চারটি গবাদি পশু রয়েছে। বিভিন্ন সময় গবাদি পশুগুলো
অসুস্থ হলে বেসরকারি চিকিৎসকের কাছে ছুটতে হয়। কারণ প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি
হাসপাতালে কোনো সার্জন নেই।’
উপজেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ
সম্পাদক জাহেদ হোসেন বাপ্পি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে জনবল
সঙ্কটের কারণে যথা সময়ে সেবা পাচ্ছে না খামারিরা। আমরা চাই, দ্রুত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে
সেবার মান বৃদ্ধি করা হোক।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল
ফরিদ বলেন, ‘মীরসরাই একটি বড় উপজেলা। এত বড় উপজেলায় অর্ধেকের কম জনবল নিয়ে সেবা দেওয়া
খুবই কঠিন। তবুও আমরা নিয়মিত সেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর
বলেন, ‘শূন্য পদগুলো পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে
আলোচনার মাধ্যমে যথাসময়ে শূন্যপদ পূরণের চেষ্টা করা হবে।’