মসজিদের জমি বিক্রি করে হজ পালনের অভিযোগ

গাজীপুর (মহানগর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম

সালাউদ্দিন সরকার। ছবি: যুগান্তর
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইলের খিলগাঁও এলাকায় মসজিদের জমি দখল ও বিক্রি করে হজ পালনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সালাউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই জমির ক্রেতা বাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ১২/১৩ বছর আগে খিলগাঁও মৌজায় আরএস ৫২৩ দাগে সাত শতক জমি স্টাম্পের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা বায়নামূলে ক্রয় করেছিলাম। সালাউদ্দিন সবার কাছ থেকে দোয়া চেয়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে হজ পালন করতে গিয়েছিলেন। কথাছিল হজ পালন শেষে দেশে এসে ওই জমি রেজিস্ট্রেশন করে দেবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার টাকা ফেরত দেননি ও জমিও দেননি। টাকা ফেরত চাইলে আমার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন।পরে জানতে পারি মসজিদের দুই শতকসহ আমার সাত শতক জমি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বায়না করে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সালাউদ্দিন সরকার। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে হয়রানি করে আমাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরিয়েছেন।ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে সুবিধাভোগী সালাউদ্দিন সরকার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাকে পথে বসিয়েছে।জমিটি পূর্বাচলের পাশে থাকায় আমি আর্থিকভাবে কোটি টাকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিগত দিনে সালিস বিচার করেছেন- এমন স্থানীয় নির্বাচিত তিনজন কাউন্সিলর ছিলেন। তারা হলেন- সুলতান উদ্দিন আহমেদ, বাছির ও মোমেন মিয়া। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। তিনি দাপট দেখিয়ে কারো বিচার মানেননি।
সাবেক ৪১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোমেন মিয়া বলেন, ‘সালাউদ্দিন আমার আত্মীয় বাছির উদ্দিন সরকারের প্রতারণা করে ১০ লাখ টাকা মাইরা দিছে।’
খিলগাঁও পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সিনিয়র সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সরকার জানান, স্বাধীনতার পর প্রায় ৫০ বছর আগে ওয়ারিশ সূত্রে মালিক মকবুল নেছা ওয়াকফ করে দুই শতক জমি মসজিদের নামে রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছিলেন। সেই জমিসহ স্টাম্পের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা বায়না করে হজ পালন করেছেন তিনি।এখন ওই জমি কলাবাগান করে জোরপূর্বক ভোগ দখলে রেখে মসজিদের জমি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিরোধী হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি।
মসজিদের সহসভাপতি সৈয়দ আলী সরকার বলেন, আমার দাদি মকবুল নেছা দুই শতক জমি মসজিদে ওয়াকফ করে দিয়ে গেছেন।আওয়ামী লীগের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মসজিদের জমিতে কলাবাগান করেছেন সালাউদ্দিন।তাছাড়া শুনেছি নিরুদ্দেশ একজন বিমানবন্দরের কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের ৭ শতাংশ জমির মালিকও আমমোক্তার নামা দলিলমূলে এখন সালাউদ্দিন সরকার। যেই দলিল দাতা মোশারফ নন।কিন্ত ওই দাগে মসজিদের জমিসহ ১৯ শতক জমির ওপর কলাবাগান করে দখল করেছেন তিনি। আমরা মসজিদের জমি পুনরুদ্ধার করতে ও প্রতারক সালাউদ্দিনে সরকারের বিচার দাবি করছি।
মসজিদের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন জানান, অনেক বছর ধরে মসজিদের জমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন তিনি।কিন্তু কেন? যতটুকু জানি তার জমির সঙ্গে কারো জমি থাকলে তার আর রক্ষা নাই।
মসজিদের জমি দখলের বিষয়ে জানতে চেয়ে সালাউদ্দিন সরকারের মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।