সাইফুলের ‘গোপন জিম্মিশালা’ থেকে অপহৃত ১৪ জন উদ্ধার
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কক্সবাজারের টেকনাফে মানবপাচারকারী চক্রের গোপন জিম্মিশালা থেকে ১৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের উত্তর লম্বরী এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া ১৪ জনকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে সাগরপথে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। অপহরণকারীরা পরিবারগুলোর কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে ভয় দেখাত।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- আকতার হোসেন (২২), সাইফুল ইসলাম (১৬), খায়ের হোসেন (১৮), রশিদুল ইসলাম (১৯), আয়াজ (১৮), মফিদুল রহমান (১৫), শাহারিয়া মোহাম্মদ (১৯), মোজাহের (২৮), কায়ছার (২৩), লুৎফর রহমান কাজল (১৭), সিরাজুল হক (২৪), আবু তালেব (৩৬), কাসেম (২৬) ও মহিউদ্দীন বাবু (১৭)। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, চক্রটির মূলহোতা হলো লেঙ্গুরবিল এলাকার মৃত হাফেজ আহমদের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৩৯)। তার নেতৃত্বেই অপহরণ ও পাচারের কাজ পরিচালিত হচ্ছিল। চক্রটিকে আটক করতে গত ২৪ এপ্রিল গভীর সাগরে অভিযান চালানো হয়েছিল; তবে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়।
উদ্ধারকৃতদের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে বিজিবি মেরিন ড্রাইভ ও দমদমিয়াসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায়। এতে উত্তর লম্বরী এলাকার একটি বাড়িতে জিম্মি রাখা ১৪ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, দালালদের মাধ্যমে চাকরি ও ভ্রমণের লোভ দেখিয়ে তাদের টেকনাফে আনা হয়। পরে সিএনজি চালকদের সহায়তায় অপহরণ করে গোপন আস্তানায় আটকে রাখা হয়। নির্যাতনের পর পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা হয়। এমনকি নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হতো।
উদ্ধার হওয়া কাসেম ও মহিউদ্দীন জানান, ইনানীতে বেড়াতে গিয়ে সিএনজিচালকের ফাঁদে পড়ে অপহৃত হন। চক্রটি এক লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেও ১৮ দিন জিম্মি করে রেখেছিল।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানব ও মাদক পাচারের মামলা করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিজিবি ১৪ জনকে একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করেছে বলে শুনেছি। আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
