Logo
Logo
×

সারাদেশ

পা দিয়ে লিখে মানিক হাবিপ্রবির বি ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২

Icon

আব্দুল আজিজ মজনু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১০:২০ পিএম

পা দিয়ে লিখে মানিক হাবিপ্রবির বি ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান পা দিয়ে লিখে এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান। এবার হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।

রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হলে মানিকের এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বাবা-মা আত্মীয়স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীসহ সবাই আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

মানিক রহমান ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০২৪ সালে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের বড় ছেলে।

শুধু এসএসসি-এইচএসসিতে নয়, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করেছিল মানিক। তিনি পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং এ যথেষ্ট পারদর্শীও। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন তার। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কারণে অবশেষে তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচিত হলো। 

মানিকের বাবা মো. মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাত নেই, একটি পা অন্যটার চেয়ে অনেকাংশে খাটো; কিন্তু প্রতিবন্ধী হলেও আমরা তাকে প্রতিবন্ধী মনে করি না। হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর এবং পড়াশোনায় সে খুবই মনোযোগী। সবার দোয়ায় আজ তার  কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নের দ্বার উন্মোচিত হলো। সবাই দোয়া করবেন সে যেন একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে।

মানিক যুগান্তরকে জানান, আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত, বাবা মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সব পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এ বছর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ১৯২ তম স্থান অধিকার করেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।

কুড়িগ্রাম

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম