কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মৌটুপী গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে দুই বংশের মধ্য এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের সরকার বাড়ি ও কর্তাবাড়ি দুই বংশের মধ্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৫৬ বছর যাবত দ্বন্দ্ব চলছে। সরকার বাড়ির নেতৃত্ব দেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সরকার শেফায়াত উল্লাহ এবং কর্তা বাড়ির নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা তোফাজ্জল হক। দুই বংশের দ্বন্দ্বে দুইপক্ষের সংঘর্ষে গত ৫৫ বছরে ১৪ জন খুন হয়েছে, আহত কয়েছে কয়েকশ। এছাড়া বাড়িঘর লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে একাধিকবার। এ ঘটনায় হয়েছে কয়েকশ মামলা। এসব মামলায় জেলহাজতও খেটেছেন দুই বংশের লোকজন।

সর্বশেষ সরকার বাড়ির কাইয়ুম হত্যার পর কর্তাবাড়ির লোকজন গ্রামছাড়া হয়ে যায়। কয়েক মাস গ্রাম ছাড়া থাকার পর কাইয়ুম হত্যা মামলায় জামিন নিয়ে গত ঈদুল ফিতরের পর নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ফের দুই বংশের মধ্য সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পুনরায় বাড়িছাড়া হয় কর্তাবাড়ির লোকজন। এরপর মঙ্গলবার সকালে কর্তাবাড়ির লোকজন প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর ফের দুই বংশের মধ্য সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হন।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ডা. রেজিনা পারভিন বলেন, মৌটুপী গ্রামের দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ২০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাকি আহত রোগীরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্য গুরুতর আহত ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাসহ কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানান।