দেশের অন্যতম মিঠাপানির কার্প জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের নদী চট্টগ্রামের হালদা। সেখানে ডিম ছাড়ার জন্য মানত করে নদীতে শিরনী দিয়েছেন সংগ্রহকারী জাকির হোসেন। 

শুক্রবার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। 

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন ডিম সংগ্রহকারী তার দুই সঙ্গী নিয়ে হালদা নদীর খলিফারঘোনায় নৌকায় একটি বালতিতে শিরনী নিয়েছেন। সেখান থেকে একটি বড় চামচ দিয়ে ডিম ছাড়ার জন্য দোয়া করে মা-মাছকে শিরনী দিচ্ছেন। 

প্রসঙ্গত, প্রজনন মৌসুমের প্রায় এক মাস পার হয়ে গেছে। এখনও হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছাড়েনি মা মাছ। এরমধ্যে গত বছরের মতো একের পর এক ড্রেজারের আঘাতে মা-মাছ মরে ভেসে উঠেছে। যা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী ও হালদা বিশেষজ্ঞদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

মা-মাছকে শিরনী দেওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে কিনা- জানতে চাইলে হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এপ্রিল থেকে জুনের শেষ পর্যন্ত হালদার মা-মাছের প্রজনন মৌসুম। এখনো ডিম ছাড়েনি মা-মাছ। তাই ডিম ছাড়ার জন্য দোয়া করে হালদা নদীতে শিরনী দিয়েছেন একজন ডিম সংগ্রহকারী। এরকম একটি ভিডিও খলিফারঘোনা থেকে সংগ্রহ করে রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করেছেন। 

তিনি বলেন, হালদা নদী নিয়ে প্রায় ২৪ বছর যাবৎ কাজ করছি। এতদিন এ তথ্য আমার জানা ছিল না। তাছাড়া এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদী বলেন, হালদার পাশের মানুষের সংস্কৃতি, উৎসব, জীবিকা, আনন্দ, বেদনা সব কিছুই যেন এ নদীকে ঘিরে। তাই হয়তো বদ্ধমূল ধারণা থেকে হালদা নদীর খলিফাঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী জাকির হোসেন এ কাজটি করেছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এই মানুষ গুলোর জীবিকাকে যেন সহজ করে দেন এ দোয়া করি।