
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চরপাড়া বাজারে দুই দলে বিভক্ত হয়ে ১০ গ্রামের মানুষের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বাজারের ২০টি দোকান ভাঙচুর ও লুট করা হয়েছে। রোববার বেলা ২টা থেকে ৪ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন।
ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, শনিবার বাজারে মাছ বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রোববার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় চরমপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির দুই ছত্রের সঙ্গে ৯ শ্রেণির দুই ছত্রের তর্ক-বিতর্ক এবং মারপিটের ঘটনা ঘটে।
এর জের ধরে শৈলকূপা উপজেলার মীর্জাপুর ইউনিয়নের মালমারি ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামসহ আশপাশের কমপক্ষে ১০ গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
চরপাড়া বাজার হরিণাকুণ্ডু ও শৈলকূপা উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত। কুমার নদীর ওপর দেওয়া একটি ব্রিজ দুই উপজেলার সংযোগ স্থাপন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হরিণাকুণ্ডু রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন জানান, সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ইটপাটকেল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তিনি (চেয়ারম্যান) অভিযোগ করেন, শৈলকূপা উপজেলার শত শত মানুষ এ সংঘর্ষে অংশ নেয় এবং বাজারে ব্যাপক ভাঙচুরসহ দোকানপাট থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। দুই থানার (হরিণাকুণ্ডু ও শৈলকূপা) পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। বিকালে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাজারের অন্তত ২০টি দোকানে হামলা করে ভোজ্যতেলসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মীর্জাপুর ইউনিয়নের মালমারি, জাদবপুর এলাকার হাজারো গ্রামবাসী আনন্দ মিছিলসহ বাজারে ঢুকে ভাঙচুর লুট শুরু করে দেয়। একপর্যায়ে চরপাড়া, টাকিয়ার পোতা আড়পাড়ার শত শত মানুষ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায়। বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকে উভয়পক্ষ। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বিকালে সেনা সদস্যরা মারমুখি হয়ে এলাকায় ছুটে আসার পরে সংঘর্ষ বন্ধ হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শৈলকূপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, তুচ্ছ ঘটনায় বাজারের দুই পারের শত শত গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। দোকানপাট ভাঙচুরসহ লুট হয়েছে বলেও জানান ওসি।
বর্তমানে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশসহ বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুজ্জামান জানান, টানা ৪ ঘণ্টা স্থায়ী এ সংঘর্ষে বাজারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি চরম অবনতির আশঙ্কায় বিপুল সেনাসদস্যসহ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।