Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘আমার কাছে মানুষ একটা প্রাণী মাত্র’

Icon

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম

‘আমার কাছে মানুষ একটা প্রাণী মাত্র’

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় গত (এপ্রিল) মাসে নদী পাড়ের গাছ কাটা ও নদীর পরিবেশ নষ্ট করার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। 

অভিযুক্তরা হলেন- ওই উপজেলা গুমুরিয়া গ্রামের রুকুন মিয়া ও কান্দাপাড়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন। আর অভিযোগকারী হলেন স্থানীয় মনসুর আহমাদ মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল আতিক আহমেদ। অভিযোগটির শুনানি হয় গত ৩০ এপ্রিল। 

শুনানি শেষে গতকাল রোববার সরেজমিন তদন্ত করতে যান নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মতিন। তিনি গ্রামবাসী, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কংস নদীর পাড়ে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে নদীর পরিবেশ রক্ষায় কি করণীয় তা স্থানীয়দের বুঝাতে থাকেন।

এ সময় গুমুরিয়া গ্রামের খাজ আলী (৭৫) পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে বলেন, আমরা গ্রামবাসী মিলে এ রাস্তাটি করেছি। বিল্লাল মিয়া আর রুকন হোসেন আসামি হলো কেন? আসামি হলে আমরা গ্রামবাসী সবাই হব। এই নদী পাড়ের রাস্তা দিয়ে আমরা সবাই মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ ও ঈদগাহ মাঠে যাই। এটি একটি আদি রাস্তা,আমরা গরীব মানুষ আপনি একটু রাস্তাটির ব্যবস্থা করে দিন। আমরা এই রাস্তাটির জন্য কষ্টে আছি। এই সময় গ্রামবাসীও এই দাবি করেন। 

এমন দাবি শুনে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মতিন গ্রামবাসীকে বলেন, দেখুন, আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক। আমার কাছে মানুষ হলো একটা প্রাণী মাত্র। আমার কাছে বাঘ, সিংহ যেমন একটা প্রাণী তেমনি মানুষও একটা প্রাণী। এই নদীতে যে প্রাণীগুলো আছে এগুলো আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় গ্রামবাসীকে তিনি বিভিন্ন রকম অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়ার কথাও শুনান। এবং এই রাস্তার উপর যারা প্রকল্প দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।

গুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ২০২২ সালে কংস নদী খনন করে নদীর পাড়ের মানুষ গুলোর ঘরবাড়ির উপর মাটি ফেলে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। যার কারণে আমরা বর্ষায় ঘর থেকে বের হতে পারি না। এরপর আসমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমাদের দুর্ভোগ দেখে ছোট একটি প্রকল্প দিয়ে এলোমেলো মাটিগুলো সরিয়ে আমাদের হাঁটাচলার উপযোগী একটি রাস্তা করে দেয়। এখন আমাদের উপর অভিযোগ, আমরা বুঝি গাছ কেটে ফেলেছি। অথচ তিন বছর হলো নদীতে মাটি কেটে আমাদের ঘরবাড়িগুলোর সর্বনাশ করে দিয়ে গেছে। 

অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন বলেন, গ্রামবাসী রাস্তা করেছে আর আমি মামলার আসামি হয়েছি। ভাল কাজেও বাঁধা। তদন্ত করে নদীর পাড়ে গাছ কাটার কোন সত্যতা পায়নি। আগামী ২৫ মে আমার অভিযোগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। 

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মতিন আরও বলেন, নদীর পরিবেশ নষ্ট করে যারা রাস্তা করেছে তাদের ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট (ক্ষতি মূল্যায়ন) দিতে হবে।

এই রাস্তা দিয়ে পায়ে হাঁটা যাবে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, কিছু সংরক্ষিত এলাকাব্যতিত সব জায়গায় পায়ে হাঁটা যাবে।

নেত্রকোনা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম