মেহেরপুরে এবার হাজার কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে
তোজাম্মেল আযম, মেহেরপুর
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মেহেরপুর জেলায় কুরবানির পশুর চাহিদা ৯০ হাজার। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মেহেরপুরে চাহিদার দ্বিগুণ পশু প্রস্তুত হয়েছে। জেলায় এবার ১ হাজার ১শ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে মনে করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও খামারিরা।
মেহেরপুরের গবাদিপশুর খামারিদের আবেদন- বিদেশ থেকে পশু আমদানি করে অতিরিক্ত সরবরাহে যেন বাজারে পশুর দাম কমে না যায়। তাতে খামারিরা পশুপালনে উৎসাহ হারাবেন।
পশু কুরবানিতে যাতে কোনো ঘাটতি না হয় এবং বাজারমূল্য স্থিতি রাখর প্রয়োজনে প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে খামারিরা ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি পশু প্রস্তুত করতে পেরেছেন; যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যাবে।
এসব পশুর মধ্যে আছে- ব্ল্যাক বেঙ্গল ও যমুনাপাড়িসহ বিভিন্ন জাতের ছাগল ১ লাখ ১৫ হাজার, গরু ৫৩ হাজার ও ভেড়া-মহিষ মিলিয়ে আরও ৪ হাজার; যা থেকে হাজার কোটি টাকার কেনা-বেচা হবে।
গত কয়েক বছর ধরে মেহেরপুরে পশুপালন খাতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। খামারিরা আধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান ও ওজনদার পশু পশু প্রস্তুত করেছেন। তাছাড়া, ভারত ও মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি সীমিত হওয়ায় দেশীয় খামারিরা উৎসাহিত হয়েছেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর বারাকপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক হাসান আলী। তিনি দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে প্রবাস জীবন পার করে দেশে ফিরে যুব উন্নয়ন থেকে পশু পালনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ছোট পরিসর একটি খামার তৈরি করেন। এ বছর খামারে রয়েছে ১৭টি কুরবানি উপযোগী গরু, ১০টি ছাগল ও চারটি মহিষ। ইতোমধ্যেই ১১ লাখ টাকায় চারটি মহিষ বিক্রি করেছেন। গরু ছাগল মিলিয়ে আরও কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার পশু বিক্রি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আশাবাদী ১২ লাখ টাকা লাভবান হবেন।
গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকখ্যাত মেহেরপুরের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। এছাড়াও এখানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে যমুনাপাড়ি জাতের ছাগল। আর ছাগল, গরু, মহিষ, ভেড়াসহ পশু পালনের জন্য জেলায় হাসান আলীর মতো তরুণ উদ্যোক্তাদের হাতে গড়ে উঠেছে পাঁচ শতাধিক বাণিজ্যিক খামার। এছাড়াও পারিবারিকভাবে গড়ে উঠেছে আরও ২২ হাজার খামার।
কৃষিনির্ভর এই মেহেরপুর জেলায় গৃহপালিত পশু উৎপাদনে ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এ জেলার গ্রামীণ জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে রয়েছে গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত বিভিন্ন ধরনের পশু; যা জেলার অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ব্যানার্জী জানান, গৃহপালিত পশু উৎপাদনে বেকার যুবক, গৃহিণী ও খামারিদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে এই খাতেই রয়েছে দারুণ সম্ভাবনা।
তিনি আশা প্রকাশ করছেন, মেহেরপুর জেলায় এবার ১১শ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে।
