ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন, অ্যাম্বুলেন্স চালকের বুদ্ধিতে ধরা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রামে বড় ভাইকে খুন করে রাতের আঁধারে লাশ নিয়ে পালানোর সময় ছোট ভাই ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে চান্দগাঁও থানাধীন চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ২ নাম্বার রোডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ সাহেদ (৩৫) রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ার জালাল আহমদের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত সাহেদের ছোট ভাই মোহাম্মদ জাহেদ ও তার স্ত্রী তাসমিন বিনতে আসলাম ওরফে ওহিকে গ্রেফতার করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। জাহেদ ও তার স্ত্রী ইয়াবা আসক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের ধারণা ইয়াবা সেবনসহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার জেরে ঘুমন্ত অবস্থায় বড় ভাইকে তারা খুন করেছে। এরপর লাশ নিয়ে পালানো ও গুমের চেষ্টা করলে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বুদ্ধিমত্তায় তাদের আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাহেদ, জাহেদ ও আরেক ভাই পরিবার নিয়ে দুবাইতে থাকতেন। পাশাপাশি তাদেরও মা দুবাইতে বসবাস করেন। কয়েক মাস আগে জাহেদ ও সাহেদ দেশে ফিরে আসেন। তারা স্ত্রীদের নিয়ে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় বসবাস করছিলেন। কিছুদিন আগে সাহেদের স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়।
ইয়াবা আসক্তি নিয়ে ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে সাহেদের মনোমালিন্য চলছিল। বুধবার রাতে বাসায় তারা তিনজন ঝগড়া করেন। জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে বাসার আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে। ঝগড়া শেষে সাহেদ নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে ওই কক্ষে ঢুকে জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে ঘুমন্ত সাহেদকে ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এরপর স্বামী-স্ত্রী মিলে প্রথমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে লাশ গুমের পরিকল্পনা করে। তারা লাশ সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাসার সামনে থেকে প্রধান সড়কে নিয়ে আসেন। পরে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে ফোনে একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন। তবে লাশ তোলার সময় অ্যাম্বুলেন্স চালকের সন্দেহ হয়। তিনি কৌশলে চান্দগাঁও থানা পুলিশকে বিষয়টি মোবাইলে জানিয়ে দেন।
এদিকে মোবাইলে কথা বলতে বলতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তারা তাদের গ্রামের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ার দিকে রওনা দেন। অন্যদিকে পুলিশও দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সটি আটকাতে অভিযানে নামে। চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার কাছাকাছি এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে সাহেদের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার এবং জাহেদ ও তার স্ত্রী তাসমিনকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে সাহেদকে হত্যার বিষয়টি। পরে পুলিশ সাহেদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে আটক স্বামী-স্ত্রীকে থানায় নিয়ে যায়।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, বড় ভাইকে খুন করে রাতের আঁধারে লাশ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছোট ভাই ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে বর্ণনা দিয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘাতক স্বামী-স্বামী স্ত্রী ইয়াবা আসক্ত বলে তারা জানতে পেরেছেন।
