জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে চলছে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক থাকার কথা ২১ জনের। কিন্তু রয়েছেন মাত্র দুজন। স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে নিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আনা হয় দুজন চিকিৎসক। এর মধ্যেই একজন চিকিৎসক ইতোমধ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। আরেকজনের বদলি হওয়ার কথা রয়েছে।
শুধু চিকিৎসক সংকট নয়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবলেও রয়েছে তীব্র সংকট। এভাবেই চলছে নাটোর লালপুরের উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক ও রোগীরা।
লালপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি
৫০ শয্যাবিশিষ্ট। এ হাসপাতালে ২১ চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন
মাত্র দুজন। অস্ত্রোপচার (সার্জারি), মেডিসিন, শিশু, অর্থোপেডিক, কার্ডিও, চক্ষু,
ইএনটি (নাক, কান ও গলা) এবং যৌন ও চর্ম বিভাগে কোনো চিকিৎসক নেই। এছাড়া অন্তবিভাগ মেডিকেল
অফিসার (আইএমও), জরুরি বিভাগ মেডিকেল অফিসার (ইএমও), প্যাথোলজিস্ট, ডেন্টাল সার্জনের
পদ শূন্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে তৃতীয় ও চতুর্থ
শ্রেণির জনবলেও রয়েছে তীব্র সংকট। তৃতীয় শ্রেণির ৭৯টি পদের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ জন। আর
চতুর্থ শ্রেণির ২৬টি পদের মধ্যে ২৩টি পদ শূন্য রয়েছে।
সম্প্রতি লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেবা নিতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে
রোগীদের। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে করতে অনেকে
অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে রোগী
ও তাদের স্বজনদের অভিযোগের শেষ নেই।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে
এসেছেন উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের লাভলী খাতুন (৪০)। তিনি বলেন, ‘ছেলের পেটের ব্যথায়
চিকিৎসা নিতে সকাল ৯টা থেকে দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। রোগীর অনেক চাপ।’
টিকিট বিক্রয় কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,
প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। ভর্তি থাকেন ৮০ থেকে
৯০ রোগী। চিকিৎসা নিতে আসা কাজীপাড়া গ্রামের মেহেদী হাসান (২০) বলেন, ‘দুদিন থেকে টাইফয়েডের
চিকিৎসা নিচ্ছি। স্যালাইন ও ইনজেকশন বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
ডা. মো. মুনজুর রহমান বলেন, ‘উপজেলার আড়াই লাখ মানুষ এ হাসপাতালটির ওপর নির্ভরশীল।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
