আশ্রয়ণের ঘরে তালা ঝুলিয়ে শিশুসহ ভিখারিনীকে তাড়াল প্রশাসন
বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ০৮:১১ পিএম
শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে স্বপ্নের ঘরে দাড়িয়ে আছেন ভিখারিনী শাবানা
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে এক ভিখারিনীকে বের করে তালা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ভিখারিনী শাবানা বেগম, তার ৩ শিশু সন্তান ও জটিল রোগে আক্রান্ত পিতা নিজাম উদ্দিনকে নিয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেঝেতে অতিকষ্টে দিন পার করছেন। এলাকার মেম্বার রুমন আহমেদের দাবি, শাবানার পিতার নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি স্বপ্না নামের একজন তার নামে বন্দোবস্ত আছে দাবি করায় জটিলতা তৈরী হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে উপজেলা নন্দীপাড়া মহল্লার ভূমিহীন নিজাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী শামীমাকে উপজেলা সদর ৩ নং দক্ষিণ পূর্ব ইউপির অন্তর্গত পাড়াগাও মৌজার বড়বান্দে একটি আশ্রয়ণের ঘর বন্দোবস্ত দেয় উপজেলা প্রশাসন। নিজাম উদ্দিনের সাথে বন্দোবস্ত পাওয়া ৪৯ জন ভূমিহীন পরিবারকে তাদের ঘর বুঝিয়ে দিলেও অদৃশ্য কারণে নিজাম উদ্দিনকে তখন তার প্রাপ্ত ঘরটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। নিজাম অনেক দৌড়ঝাপ করার পর দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ১৩ এপ্রিল ইউএনও বরাবর তার নামের ঘরটি তাকে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
পরে এসিল্যান্ড ইসমাইল রহমান তাকে পুলিশের সহায়তা নিতে বলেন। প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী বানিয়াচং থানার দ্বারস্থ হন নিজাম। তার অভিযোগের ভিত্তিতে থানার এএসআই ইমরুল এলাকার মেম্বার জলিল মিয়া ও তোফাজ্জুল হোসেনকে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত শেষে জানতে পারেন যে, স্বপ্না আক্তার নামে একজন একটি ঘরে অবৈধভাবে বৈধ বন্দোবস্তপ্রাপ্ত আশিক মিয়ার ঘরে আছেন এবং আশিক মিয়া নিজামের নামে বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস করছেন। এ প্রেক্ষিতে আশিক মিয়াকে জোরদখলদার স্বপ্নার ঘরে স্থানান্তর করেন ও নিজামকে আশিক মিয়ার দখলকৃত ঘরে প্রবেশ করিয়ে দেন।
এসিল্যান্ড ইসমাইল রহমান জানান, তিনি বা তার কোনো স্টাফ ঘরে তালা ঝুলায়নি, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আইনগত পদক্ষেপে আছে থানা পুলিশ তাই বিস্তারিত তারাই বলতে পারবেন। এএসআই ইমরুল হোসেন বলেন, আগামী সোমবার ৩ পক্ষকে নিয়ে থানার গোলঘরে সালিশ বৈঠক হবে, এর আগে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা সম্ভব না।
ভিখারিনী শাবানা বেগম বলেন, আমার বাবা চিকিৎসা করতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিন আমাদেরকে ঘর থেকে বের তালা দেন উপজেলা প্রশাসনের লোকজন, বর্তমানে তিনি তার তিন সন্তান ও বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে রাত্রিযাপন করছেন।
